ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় বাংলাদেশে দাম দ্রুত বাড়ছে। এ মূল্য বৃদ্ধির লাগাম এখনই টেনে ধরা প্রয়োজন; নইলে পিঁয়াজ নিয়ে গত বছরের অক্টোবর-নভেম্ব^রে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। ভারত পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় চাহিদা ও জোগানে বড় রকম ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশে পিঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ভারতের বাজারে দাম বেড়ে যাওয়া এবং তাদের আকস্মিকভাবে রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত দায়ী। বর্তমানে দেশে পিঁয়াজের মজুদ আছে সাড়ে তিন মাসের। মোকাম থেকে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সরবরাহ পরিস্থিতিও একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে পিঁয়াজের বাজার অস্থির। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকা কেজির পিঁয়াজের দাম বেড়ে সর্বোচ্চ উঠেছে ১২০ টাকায়। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে দেশে বছরে ২৫ লাখ মেট্রিক টন পিঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ২৫ লাখ টন। তবে সংরক্ষণজনিত ক্ষতি বাদ দিলে সরবরাহ দাঁড়ায় ১৯ লাখ টনের কিছু বেশি। দেশে গড়ে পিঁয়াজের প্রতিদিনের চাহিদা ৬ হাজার ৯৪৪ টন। এ হিসাবে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। পিঁয়াজের দাম বাড়ার আরেকটি কারণ গুজব বা আশঙ্কার ফলে মজুদের প্রবণতা। দাম বাড়তে শুরু করলে মজুদও বাড়তে থাকে। সংকটের সময় একশ্রেণির সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষও তাঁদের সাধ্যানুযায়ী মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করেন। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী। আমরা পিঁয়াজসহ অনেক ভোগ্যপণ্য ভারত থেকে আমদানি করি। পারস্পরিক বাণিজ্যে আলোচনা, সমঝোতা বা সহানুভূতির বিকল্প নেই। সংকটের পুনরাবৃত্তি এড়াতে এখনই পিঁয়াজ আমদানির পথগুলো সহজ ও সুগম করা দরকার। আর সংকটের সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কেনার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া ঠিক নয়।