সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

উপজেলা পরিষদ

চেয়ারম্যান-ইউএনও দ্বন্দ্ব কাম্য নয়

স্থানীয় সরকারকে বলা হয় জনগণের সরকার। যে সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের নাগরিকদের সরাসরি সম্পর্ক বিদ্যমান। তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার গণমানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিনিধিত্ব করেন। উপজেলা পরিষদ দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার। কিন্তু উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব এ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সুফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। উপজেলা পর্যায়ে থাকা সরকারের ১৭টি মন্ত্রণালয় ও দফতরের কর্মকান্ড উপজেলা চেয়ারম্যানদের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বছরের পর বছর ধরে এর সবগুলোই নিয়ন্ত্রণ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ফলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পরিষদের কর্মকান্ডে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছেন না এমন অভিযোগ করে আসছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেছেন উপজেলা পরিষদ নেতারা। লিখিতভাবেও তাদের সমস্যার কথা জানানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু সমাধানের আশ্বাস ছাড়া কোনো কিছুই পাননি তারা। স্মর্তব্য, দেশে উপজেলার সংখ্যা ৪৯২টি। এগুলোতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৬ জন। আইন অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ের ১৭টি দফতর ও বিভাগ উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের তত্ত্বাবধানে থাকার কথা হলেও আমলাতান্ত্রিক বাধা তাতে বাদ সাধছে। উপজেলা পর্যায়ের প্রায় শতখানিক কমিটিতে ইউএনও অথবা তাদের মনোনীত প্রতিনিধিরা প্রতিনিধিত্ব করায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় সরকারে জনগণের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর দ্বন্দ্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচিত প্রতিনিধি ও আমলারা যাতে আইন ও সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হন, তা নিশ্চিত করাও জরুরি। আমাদের প্রত্যাশা উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের ক্ষোভ নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে অতি দ্রুতই নজর দেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর