সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নারী পাচার

এ চক্র নির্মূল করুন

ড্যান্স ক্লাবের আড়ালে গত দেড় বছরে সহস্রাধিক নারী পাচার হয়েছে- র‌্যাবের দেওয়া এ তথ্য বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মানব পাচারের ভয়াবহ চিত্রই তুলে ধরেছে। শুধু ড্যান্স ক্লাবের নামে যদি সহস্রাধিক নারী পাচার হয়ে থাকে, তাহলে বিদেশে লোভনীয় চাকরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার নামে কত নারী ও শিশু পাচার হতে পারে, তা অনুমান করা কঠিন নয়। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় সাত লাখ মানুষ অবৈধভাবে বিদেশে পাড়ি জমান, যাদের একটি বড় অংশ যায় পাচার হয়ে। পাচারকারী চক্র নারায়ণগঞ্জে একটি নাচের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলে ট্রাভেল এজেন্সির যোগসাজশে সহস্রাধিক নারী পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জানা গেছে, দুবাইতে পাচার দমন সংক্রান্ত আইন তেমন শক্তিশালী নয়। সেখানে হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশি নারীদের জোর করে অবৈধ কাজ করানো হচ্ছে। নারী পাচার হচ্ছে দুবাই ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশসহ নেপাল ও ভারতে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সূত্র বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ নারী পাচারের শিকার হন। মূলত ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোরীদের বয়স বাড়িয়ে ২২-২৩ বছর বলা হয়। শ্রম অভিবাসনের নামে যা হচ্ছে তাও এক প্রকার পাচার। এক সময় ১০ থেকে ১৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি নারী কর্মী পাঠাত। বর্তমানে পাঁচ শতাধিক এজেন্সি শুধু সৌদিতেই নারী কর্মী পাঠাচ্ছে। গৃহকর্মী হিসেবে নারীদের বিদেশে না পাঠিয়ে নার্স ও পোশাকশ্রমিকসহ অন্যান্য খাতে পাঠানো উচিত। এতে নারীরা নিরাপদে থাকবেন। পাচার প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মানবাধিকার সংস্থা সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। এ-সংক্রান্ত অপরাধের বিচারে সাতটি ট্রাইব্যুনাল থাকলেও তা ততটা সক্রিয় নয়। সুতরাং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল ও বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে যাতে কেউ মানব পাচারের মতো দুষ্কর্মে লিপ্ত হতে না পারে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারেরই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর