মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি

সন্দেহভাজনদের সম্পদের খোঁজ নিন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাকরি মানেই আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়া। আর সে চেরাগ ঘষে চাকরিজীবনে বহুতল একাধিক ভবনের মালিক হওয়া যে অসম্ভব কিছু নয়, তার প্রমাণ রেখেছেন এই অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদল। একজন গাড়িচালক যে বেতন পান তাতে তার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থাই হওয়ার কথা। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাকরি বলে কথা। এ আলাদিনের চেরাগের বদৌলতে তিনি ইতোমধ্যে ছোটখাটো ধনকুবেরও বনে গেছেন। নিয়োগ-তদবির বাণিজ্য, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নামে-বেনামে ঠিকাদারি শুধু নয়, আবদুল মালেক রাতারাতি ভাগ্য বদলাতে বেছে নিয়েছিলেন জালনোটের কারবার। রাজধানীর হাতিরপুলে তার ৪ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা এবং তুরাগে ৬ কাঠা জমিতে সাত তলার দুটি ভবন রয়েছে। এর বাইরে স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ভাইয়ের নামে গড়েছেন আরও অঢেল সম্পত্তি। গাড়িচালক মালেকের বিষয়ে গোয়েন্দারা অনুসন্ধান চালিয়ে এমন তথ্যই পেয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক দুই দফায় মালেককে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও পার পেয়ে যান তদবিরের গুণে। তবে তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। আরও কয়েকটি সংস্থা মালেকের ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণ পাওয়ায় গত শনিবার গভীর রাতে র‌্যাব-১-এর একটি দল টঙ্গীর রমজান মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় করিৎকর্মা গাড়িচালকের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জালনোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন সেট। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনেকেই দেশবাসীর বদলে নিজেদের স্বাস্থ্য সমৃদ্ধ করার কাজে যে ব্যস্ত তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা খুব একটা কম নয়। কৌশলী এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর পোষ্যদের সবাই কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন অদৃশ্য শক্তির বলে। আবদুল মালেক ওরফে বাদলও তার ব্যতিক্রম নন। তার সিংহভাগ সম্পদ স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, মেয়েজামাইয়ের নামে। ধারণা করা হয়, বিদেশে অর্থ পাচারেও জড়িত থাকতে পারেন এই করিৎকর্মা ব্যক্তিটি। আমাদের বিশ্বাস, স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ক্লেদমুক্ত করতে সন্দেহভাজন সবার সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

সর্বশেষ খবর