প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্থার নিউইয়র্ক সদর দফতরে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল সভায় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরির তাগিদ দিয়েছেন। বলেছেন, জাতিসংঘকে দুর্বল করবে এমন কোনো ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়। পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে আমরা এটা পেয়েছি। এজন্য আমরা তাদের কাছে ঋণী এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জাতিসংঘকে একটি সত্যিকার অর্থে সার্বিক কার্যকর আন্তর্জাতিক সংস্থায় পরিণত করতে হবে। উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্ব- সবার কাছেই জাতিসংঘের প্রয়োজনীয়তা যে এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি, করোনাভাইরাস মহামারী তা দেখিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা এমন অনেক মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করেছি যা আমাদের মানবসভ্যতার নতুন ইতিহাস গড়ে তুলেছে। ইউএনজিএ-৭৫ এ ধরনের আরেকটি মুহূর্ত আমাদের সামনে এনে দিয়েছে। চলমান বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারী কভিড-১৯ আমাদের ২০৩০ এজেন্ডার লক্ষ্য অর্জনকে আরও কঠিন করে দিয়েছে। মহামারীসহ বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এ ধরনের সংকট মোকাবিলার অক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে। জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্বনেতারা এ বছর সাধারণ অধিবেশনে বসতে পারছেন না। তার বদলে সাধারণ পরিষদ মিলিত হবে ভার্চুয়াল সভায়। ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য বিশ্বনেতার মতো আগে থেকে ধারণকৃত ভাষণ দেবেন। এ বছরও তিনি আগের ঐতিহ্য বজায় রেখে ভাষণ দেবেন বাংলায়। জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এবার ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করা হচ্ছে। তার আগে মঙ্গলবার উচ্চপর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘকে ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে দূরে রাখার যে তাগিদ দিয়েছেন, তা খুবই তাৎপর্যের দাবিদার। জাতিসংঘের উচিত হবে দুনিয়ার সব প্রান্তের ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে নিরুৎসাহিত করা। কোনো দেশ যাতে জাতিসংঘকে নিজেদের প্রভাববলয় বাড়ানোর খুুঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা।