রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গায় বর্জ্যরে ভাগাড়

আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করুন

ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা নিয়ে যা কিছু ঘটছে, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। দিন, মাস, বছর থেকে এখন দশক পার হলেও এ নদীর পানিদূষণ রোধে সর্বোচ্চ আদালতের রায় কার্যকর হয়নি। আদালত দায়িত্ববানদের তলব করছে, তিরস্কার করছে, অসন্তোষও প্রকাশ করছে। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। মানববর্জ্যরে পাশাপাশি শিল্পবর্জ্য, হাসপাতালের বর্জ্য, ইটভাটা, পলিথিন ইত্যাদির কারণে বুড়িগঙ্গা দূষিত বর্জ্যরে গন্তব্যে পরিণত হয়েছে, এটা যে কোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে। বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে একসময় বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ চলত। এখন তা পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে নদীর দুই পাশ। এরই মধ্যে লোহারপুল অংশে বন্ধ হয়ে গেছে নদীর মুখ। শুধু আদি বুড়িগঙ্গাই নয়, নদীটির মূল চ্যানেল ও তুরাগের দুই পাড়ের সাড়ে তিন শর বেশি জায়গায় ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় সীমানা থেকে নদীর ৪০ ফুট ভিতরে বর্জ্যরে ভাগাড়ে বেড়ে উঠেছে সাত-আট ফুট লম্বা গাছ। নদী দখলের প্রথম পদক্ষেপটাই হলো বর্জ্য ফেলা। এরপর সেখানে ছোটখাটো দোকান ওঠে, পরে ভবন ও শিল্পকারখানা। ঢাকার নদী উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি নদী খনন, বর্জ্য অপসারণ, সীমানা পিলার স্থাপন, ওয়াকওয়ে নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুড়িগঙ্গায় ৬৮টি সুয়ারেজ সংযোগ রয়েছে, এর ৫৬টি ওয়াসার। অথচ ওয়াসা আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, বুড়িগঙ্গায় কোনো সুয়ারেজ সংযোগ নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে নদীকে দূষণমুক্ত করতে সীমানা ঠিকমতো চিহ্নিত করতে হবে। নদীর দখলদার উচ্ছেদ করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে নদী স্থায়ীভাবে তার স্ট্রাকচার হারাবে। নদী ড্রেনে পরিণত হবে। বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে অনেক কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা আছে, যারা দায় এড়াতে পারে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় বুড়িগঙ্গা রক্ষা পেতে পারে। এজন্য দ্রুত আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর