বাংলাদেশে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। পাশাপাশি সাইবার অপরাধও উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে, যা এখনই প্রতিরোধ করতে না পারলে ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে নারীরাই সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ধরনের সাইবার অপরাধের প্রবণতা বেড়েছে। অপরাধের শিকার হয়ে একটি বড় অংশই অভিযোগ করেন না। উগ্রবাদ, গুজব, রাজনৈতিক অপপ্রচার, মিথ্যা সংবাদ, গ্যাং কালচার, আত্মহত্যা, পর্নোগ্রাফি, সাইবার বুলিং, জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, পাইরেসি, আসক্তি- এর সবই হচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। বাস্তব জীবনে ঘটমান অপরাধগুলো এখন ডিজিটাল মাধ্যমে স্থানান্তরিত হচ্ছে। দৈনন্দিন কাজের নানা ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে দিচ্ছি আমরা। অপরাধীরা এগুলো কাজে লাগাচ্ছে। শিশুদের হাতে স্মার্টফোন দিয়ে দেওয়ার পর সেখানে কার্টুন দেখার নামে কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট দেখানো হচ্ছে। পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রতিদিন নারী ও শিশুদের হয়রানির অভিযোগ সবচেয়ে বেশি আসে। ভুয়া আইডি খুলে এ হয়রানি করা হয় দেশ ও বিদেশ থেকে। এর ফলে নারী ও কিশোরীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়া হয় সাইবার জগতে। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও লাভ হয় না। কারণ অপরাধীরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সাইবার অপরাধ দমনে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে সাইবার ইউনিটও। এর পরও কোনোভাবেই সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। পুলিশের হিসাবে দেশে ১৩ ধরনের সাইবার অপরাধ ঘটছে। ভুক্তভোগীর মধ্যে ৬৭.৯ শতাংশই নারী। সাইবার অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সচেতন হতে হবে জনমানুষের।