শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সংসদে রাজনীতিকরা কোণঠাসা

ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য প্রত্যাশিত নয়

রাজনীতিতে রাজনীতিকদের কোণঠাসা হওয়ার চিত্রই ফুটে উঠেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ : একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম থেকে পঞ্চম অধিবেশন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, একাদশ সংসদের সরাসরি নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে ৬১ শতাংশই ব্যবসায়ী, অন্যদের মধ্যে আইনজীবী ১৩ শতাংশ, রাজনীতিক ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য পেশাজীবীর সংখ্যা ২১ শতাংশ। প্রতিবেদনে কোরাম সংকটের প্রাক্কলিত অর্থমূল্য প্রায় ২২ কোটি ৮ লাখ ৬৩ হাজার ৬২৭ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংসদ অধিবেশনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যে মনোযোগী নন তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওই তথ্যে। আমাদের দেশের স্বাধীনতাসহ সব মহৎ অর্জনের পেছনে রয়েছে রাজনীতিকদের অনন্য ভূমিকা। এ দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, মওলানা ভাসানী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের মতো নেতারা নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজনীতিকরা তাদের অসামান্য ত্যাগ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। অথচ আজ রাজনৈতিক অঙ্গনেই রাজনীতিকরা কোণঠাসা। রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাওয়ায় রাজনীতিতে সত্যিকারের রাজনীতিকরা যেমন উপেক্ষিত তেমন নিবেদিতপ্রাণ ব্যবসায়ীরা রাজনীতিক ব্যবসায়ীদের কাছে হেরে যাচ্ছেন। রাজনীতি ও অর্থনীতি দুই ক্ষেত্রেই সৃষ্টি হচ্ছে অনভিপ্রেত সংকট। টিআইবির প্রতিবেদনে ১২ দফা সুপারিশও করা হয়েছে। এতে সংসদকে কার্যকরের স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন ও সংসদ সদস্যদের আচরণ সম্পর্কে আইন প্রণয়নের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় রাজনীতিতে রাজনীতিকরা কোণঠাসা হয়ে পড়ায় তার অশুভ প্রভাব পড়ছে দেশের সামগ্রিক রাজনীতিতে। যার অবসানে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সক্রিয় হতে হবে। সংসদে যাতে রাজনীতিকদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সুমতির বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর