শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসি

সন্তানকে সময় ও সঙ্গ দিতে হবে

চুরি-ছিনতাই বা ঘর পালানোর মতো অপরাধ পেছনে ফেলে কিশোরদের খুন-ধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে। কেউ ধর্মীয় জঙ্গিবাদ, মাদকের নেশায় ঝুঁকছে। এরা অবশ্যই দেশের কিশোরদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ নয়, কিন্তু একটি সুস্থ সমাজে এত কিশোর বিপথগামী হওয়ার কথা তো নয়। গত বছর ২৬ জুন বরগুনার সরকারি কলেজ এলাকায় রিফাত শরীফকে যখন একদল তরুণ রামদা দিয়ে কোপাচ্ছিল, তখন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি চেষ্টা করছিলেন স্বামীকে বাঁচাতে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে এ দৃশ্য সারা দেশের মানুষকে নাড়া দিয়েছিল। দাবি ওঠে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। ঘটনার ১৫ মাস পর আদালতের রায়ে জানা গেল, স্ত্রী আয়শাই ছিলেন স্বামী রিফাতের হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। তাই মিন্নিসহ ছয় আসামিকে ফাঁসির দ- দিয়েছে আদালত। বুধবার বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার রায় হয়। ওই হত্যাকান্ডের নেতৃত্বে ছিলেন সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড। যিনি ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় এলাকার দুর্ধর্ষ একটি সন্ত্রাসী দল গড়ে তুলেছিলেন। নয়ন বন্ড ঘটনার এক সপ্তাহ পর পুলিশের সঙ্গে এক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। আদালতের রায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত হয়েছেন ছয় আসামি। হত্যাকান্ডে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন চারজন। এর একজন পলাতক। কারাগারে থাকা বাকি তিনজন মুক্তি পেয়েছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘আয়েশা স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন সহানুভূতি পেতে। জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে কিশোর অপরাধ অপ্রতিরোধ্য হবে।’ মূলত আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন, আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বা তথ্যপ্রযুক্তি কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা বাড়াচ্ছে। রিফাত হত্যার রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো- কেবল উপদেশ, আইন, নীতিবাক্য, শাস্তি দিয়ে বা শাস্তির ভয় দেখিয়ে শিং গজানো ছেলেদের বাগে রাখা যাবে না। সন্তানকে সময় ও সঙ্গ দিতে হবে। স্কুল ও কলেজে তাদের আনন্দময় সৃজনশীল চর্চার অবকাশ দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর