ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশের লোকজনের বিদেশে পাড়ি দেওয়া থামছেই না। ভাগ্য বদলাতে অনেকে দেশি-বিদেশি মানব পাচারকারীদের প্রলোভনের শিকার হচ্ছে। এর ফলে সাম্প্রতিক সময়ে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশিদের নাম বারবার আসছে। মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে এ ভয়ঙ্কর যাত্রা এবং মৃত্যুর খবর বছর পাঁচেক ধরে প্রায় নিয়মিত গণমাধ্যমে আসছে। মানব পাচারের নতুন ক্ষেত্র হিসেবে এখন আলোচনায় এসেছে মধ্য ইউরোপের দেশ বসনিয়া-হার্জেগোভিনা ও স্লোভেনিয়া। এ দুটি দেশের জঙ্গলে প্রচ- ঠান্ডার মধ্যে বাংলাদেশিসহ ৬ শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীর আটকা পড়ার খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপি। তবে তার মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা কত তা উল্লেখ করা হয়নি। মানব পাচারকারী চক্রগুলো এদের বিভিন্নভাবে ক্রোয়েশিয়া হয়ে বসনিয়া বা স্লোভেনিয়ায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে আড্রিয়াটিক সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিসহ ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশগুলোয় পাঠাতে ভাগ্যান্বেষী এসব মানুষকে বিপজ্জনক যাত্রায় নামিয়েছে পাচারকারীরা। রয়টার্সের ওই খবরে বলা হয়, ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে ভেলিকা ক্লাদুসা শহরসংলগ্ন বনে একটি পরিত্যক্ত কারখানা ভবনে আশ্রয় নিয়েছে ওই লোকজন। তার মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও পাকিস্তান, মরক্কো, আলজেরিয়ার নাগরিক রয়েছে। বুধবার সকালে তাদের আগুন ধরিয়ে শীত পোহাতে, জঙ্গলের এখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি, নামাজ পড়া ও পরিত্যক্ত কারখানায় রান্না করতে দেখা গেছে। প্রকাশিত ২৫টি ছবির সবকটিতেই বাংলাদেশিদের মুখ দেখা গেছে। জানা গেছে, সার্বিয়া হয়ে দ্রিনা নদী পেরিয়ে আসছে এ অভিবাসীরা। অথচ নদীটি এতই খরস্রোতা আর উত্তাল যে যখন-তখন পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। ফলে নৌকা ডুবে অনেকেই মারা যায়। বসনিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল এ বিষয়ে খোঁজ রাখছেন। মরিয়া হয়ে যারা বিদেশ যাচ্ছেন, তার অধিকাংশই বয়সে তরুণ। তাদের মর্যাদাসম্পন্ন কাজ পাওয়া ও দালাল চক্র থেকে মুক্ত থাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের নজরদারি বাড়াতে হবে।