শিরোনাম
শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ভারতীয় জোটে ভাঙন

হেস্টিংস কূটকৌশলে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতীয় মৈত্রীজোট ভেঙে দিতে সক্ষম হন। তিনি প্রচুর অর্থ, রসদ ও সেনা বাংলা থেকে মাদ্রাজে পাঠান। এর ফলে মহিশূর বাহিনীকে পিছু হটতে হয় এবং ফরাসি বাহিনীকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। সংগত কারণেই ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ত্রাণকর্তা হিসেবে হেস্টিংস নিজেকে দাবি করতে পারেন। তা সত্ত্বেও যুদ্ধের কারণে স্বদেশে হেস্টিংসের ব্যাপক সমালোচনা হয়। তিনি একজন যুদ্ধংদেহি শাসক হিসেবে চিত্রিত হন। অভিযোগ ওঠে, ধ্বংসাত্মক ব্যয়বহুল যুদ্ধে কোম্পানির জড়িয়ে পড়ার জন্য তিনিই দায়ী। যুদ্ধের প্রয়োজনে হেস্টিংস কোম্পানির উত্তর ভারতীয় কিছু মিত্রশক্তি ও আশ্রিত রাজ্যের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। বেনারসের রাজা চৈৎ সিংহ কোম্পানিকে অতিরিক্ত কর দিতে বাধ্য হন। তিনি কোম্পানির ন্যায়সংগত দাবি মেটাতে গড়িমসি করছেন- এ অজুহাতে ১৭৮১ সালে হেস্টিংস স্বয়ং চৈৎ সিংহের রাজ্যে গিয়ে তার ওপর বিপুল অঙ্কের জরিমানা ধার্য করেন। রাজার রক্ষীদল ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে হেস্টিংসকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে হয়। যথাশিগগির ব্রিটিশ কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেও এ ঘটনা একটা বদ্ধমূল ধারণার সৃষ্টি করে যে, হেস্টিংস স্বৈরাচারী মনোভাব থেকে এহেন কাজ করেছিলেন এবং নিজের জন্য অহেতুক বিপদ ডেকে এনেছিলেন। বেনারসের পর হেস্টিংস ইংরেজদের মিত্র অযোধ্যার নবাবের কাছ থেকে বলপূর্বক অতিরিক্ত অর্থ জোগাড় করেন। নবাব ভূমিকর বাড়াতে এবং তার মা ও দাদির বিপুল সঞ্চিত সম্পদ জবরদখল করে কোম্পানির দাবি মেটাতে বাধ্য হন। এ ক্ষেত্রেও হেস্টিংসের জবরদস্তি উৎপীড়নমূলক হস্তক্ষেপই প্রতিভাত হয়। তাঁর শাসনামলজুড়ে হেস্টিংস ছিলেন শিক্ষা-সংস্কৃতির একজন উদার পৃষ্ঠপোষক। চার্লস উইলকিন্স-কৃত ভগবদ্ গীতার অনুবাদের জন্য তিনি বিশেষ গৌরব বোধ করতেন। তিনি এর একটা চমৎকার ভূমিকা লিখে দেন। তাঁর উৎসাহে ১৭৮৪ সালে ‘বেঙ্গল এশিয়াটিক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর