বিচারের মাধ্যমে ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষই ঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার প্রায় দুই দশক আগে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম নামে এক কর্মসূচির আওতায় ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় যেসব ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার চালু করে, তার কার্যকারিতা নিয়ে আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে না। একের পর ধর্ষণ ও নির্যাতনের খবর আসছে গণমাধ্যমে। সিলেটের পর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বখাটে যুবকদের অবৈধ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক নারীকে উলঙ্গ করে দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। ২১ দিন আগে বেগমগঞ্জের নুর ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বখাটে দেলোয়ার হোসেন, বাদল, কালাম ও রহিমের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাতে ঘরে ঢুকে ভিকটিমের ওপর পৈশাচিকতা চালায় এবং ভিডিওচিত্র ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকের এ ঘটনায় ওই নারী রবিবার বেগমগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেন। দুই মামলাতেই নয়জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে ওই নারী অভিযোগ করেছেন, স্বামীকে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে গত এক মাস তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছিল। ইতিমধ্যে প্রধান আসামি বাদলসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে হতাশা রয়েছে। ভিকটিম ধর্ষকদের স্বজন ও সমাজের ভয়ে মুখ খুলে বলতে চায় না। বিচার চাইতে গেলে লাঞ্ছনার শিকার হয়। আসামিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, শারীরিক আক্রমণ ইত্যাদি চলে। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আমরা মনে করি, নারী নির্যাতন রোধে আইন প্রয়োগের প্রতি ধাপে দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। অপরাধীদের দ্রুত বিচারের অধীনে সাজা নিশ্চিত করতে হবে।