বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ

আন্তর্জাতিক দেনদরবার বাড়াতে হবে

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান পাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। কভিড-১৯-এর কারণে দুনিয়ার অন্যসব দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যে অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সবকিছু করা হবে নিয়ম মেনে, জাতিসংঘের সব শর্ত পূরণ করে। স্মর্তব্য, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করে। ওই সময় জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি জানিয়েছিল, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য বিবেচ্য মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করলেও তা ছয় বছর ধরে রাখতে হবে। তিন বছর পরপর সেটি পর্যালোচনা করা হবে। তিন বছর পর নির্ধারিত ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভাটি হবে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে। এ অবস্থায় কভিড-১৯-এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে নাকি পিছিয়ে যাবে তা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে চলছিল আলোচনা। এ বছরের এপ্রিলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯-এর প্রভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংকুচিত হওয়ায় এলডিসি দেশগুলোর উত্তরণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। কারণ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর এলডিসি হিসেবে পণ্য রপ্তানিতে যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাওয়া যায় তা থাকবে না। আবার বৈদেশিক ঋণে সহনীয় সুদ ও নমনীয় শর্তও সীমিত হয়ে আসবে। করোনাভাইরাস দুনিয়াজুড়ে অর্থনীতির ওপর যে আঘাত হেনেছে তা এক কথায় ভয়াবহ। মহামারীজনিত ক্ষতির অর্থনৈতিক দিকটিই সবচেয়ে তীব্র। তার পরও বাংলাদেশ কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার সামর্থ্য দেখিয়েছে। করোনাভাইরাসে ভেঙে পড়া অর্থনীতির দ্রুত পুনর্গঠনে সক্ষমতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার বিষয়টি অবশ্যই মর্যাদার। তবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে চলে আসার পর আরও কিছুকাল যাতে বাংলাদেশ আগের সুযোগ-সুবিধাগুলো ভোগ করে সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেনদরবার চালানোর বিষয়টিও সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর