বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

কর্মসংস্থানে বিসংবাদ

সমস্যা মোকাবিলায় হতে হবে দৃঢ়প্রত্যয়ী

করোনাভাইরাসের আগ্রাসন সারা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশেও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রগুলোকে সংকুচিত করে ফেলেছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা। এ বছর একের পর এক বন্যা কৃষি ক্ষেত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। করোনায় কোটি কোটি মানুষের আয় কমে যাওয়ায় তারা যখন দিশাহারা, তখন তরিতরকারি কিনতে গিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় পড়ছেন ক্রেতারা। একই সময়ে বিপদ ডেকে আনছে অন্তত ২ লাখ প্রবাসীর কাজ হারানোর সমস্যা; যার সিংহভাগ ইতিমধ্যে দেশে ফেরত এসে কর্মহীনদের সংখ্যা স্ফীত করছেন। করোনাভাইরাস দুনিয়াজুড়ে যে গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে তার পরিণতিতে বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য শিল্পকারখানা। মানুষের ভোগবিলাসের চাহিদা কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই শিল্পের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন শিল্পমালিকরা। একমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্যসব বেচাকেনা ঠেকেছে তলানিতে। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন অনেক শিল্পমালিকও। আর বোধগম্য কারণেই কর্মীরা কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় থাকলেও চাকরি হারানোর আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। সারা দেশের অধিকাংশ জেলা বন্যাকবলিত হওয়ায় নিত্যপণ্যের বাজারেও চলছে দর বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, সংকুচিত হয়ে আসছে বেসরকারি খাতে চাকরির সুযোগও। রেমিট্যান্স আয় দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা। প্রতিনিয়ত প্রবাসীরা দেশে ফেরত আসায় সে আয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। করোনার আগে দেশে আসা প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে ফিরতে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে দেশের সংকুচিত হয়ে আসা কর্মক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি সংকট। এ পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় সরকার আগেভাগে পদক্ষেপও নিয়েছে। মন্দা উত্তরণে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ১ লাখ কোটি টাকার প্যাকেজ; যা সমূহ বিপর্যয় থেকে দেশের অর্থনীতিকে নিরাপদে রাখার ক্ষেত্রে অনেকাংশেই অবদান রাখছে। তার পরও স্বস্তি মিলছে না করোনা ও বন্যার আঘাতে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়ে ওঠায়। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এসব সমস্যা মোকাবিলায় সরকারকে আরও দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে লড়তে হবে। এ লড়াইয়ে হেরে যাওয়া চলবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর