রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

উত্তরে জমি বেদখল

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায় নির্ধারণ করুন

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন শুধু নয়, যে কোনো সরকারি বা স্থানীয় সরকারের জমি বেদখল, দখলমুক্ত এবং ফের বেদখল নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। সরকারি বা স্থানীয় সরকারের জমি বেদখলের পেছনে কিছু কর্মচারী ও কর্মকর্তার কালো হাত যে জড়িত থাকে তা ওপেন সিক্রেট। সাপ হয়ে কামড়ানো এবং ওঝা হয়ে ঝাড়ানোর কিম্ভূতকার ভূমিকা পালন করেন তারা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হলেও তার রেশ থিতিয়ে আসতেই আবারও ফিরে আসে অপদখলকারীরা। এ ক্ষেত্রেও স্ফীত হয় কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর পকেট। আর সে কারণেই গাবতলীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের উদ্ধার করা ১৫৭ বিঘা জমি ফের চলে গেছে প্রভাবশালীদের দখলে। অপদখলকৃত জমিতে কেউ নিজে ইট-বালু-সুরকির ব্যবসা করছেন। দখলদারদের অনেকে অপদখলকৃত জমি প্লট করে ভাড়া দিয়েছেন বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা বাজারমূল্যের এ জমি থেকে মাসে দেড় কোটি টাকার ভাড়া আদায় হলেও জানে না সিটি করপোরেশন। ২০১৭ সালে উত্তর ঢাকার প্রথম মেয়র আনিসুল হক অবৈধ দখল উচ্ছেদে হাত দিলেও তার মৃত্যুর পর থেমে যায় সে উদ্যোগ। রামচন্দ্রপুর স্লুইস গেট থেকে ঢাকা-আরিচা পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়কের দুই পাশে প্রয়াত মেয়রের উদ্ধার করা জমিতে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ দোকান, বাস-ট্রাক স্ট্যান্ড। বেড়িবাঁধ থেকে তুরাগ নদের ওয়াকওয়ে পর্যন্ত ৫ শতাধিক ইট-বালু-সুরকির আড়ত গড়ে উঠেছে। অপদখলকৃত এলাকায় জমির মালিক উত্তর সিটি করপোরেশন এবং প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত লেখা সাইনবোর্ড থাকলেও তা মান্য করার কেউ নেই। উত্তর সিটির মেয়র অপদখলকৃতদের উচ্ছেদে অচিরেই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রশ্ন হলো, দখলমুক্ত করার পর তা সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? এ ক্ষেত্রে উত্তর সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি কোথায়- তাও উন্মোচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর