রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুদ্ধি অভিযান

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে

তিন বছর চলে গেছে কিন্তু মিয়ানমারের রাখাইন থেকে উৎখাত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। এক হিসাব অনুযায়ী, শরণার্থী শিবিরগুলোয় প্রতি বছর ৬০ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করছে। ক্রমবর্ধমান এ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের দাবিও জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তি ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। উদ্যোগের অংশ হিসেবে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অবস্থানকারী সন্ত্রাসী, ইয়াবা ও মানব পাচারকারী চক্রের হোতাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে হয়তো শান্তি ফিরে আসবে। সম্প্রতি যত ইয়াবার চালান আটক হচ্ছে তার সিংহভাগের বডি ফিটিং হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ইয়াবা বহনকারীরও বেশির ভাগ রোহিঙ্গা। কিন্তু ক্যাম্পে অবস্থানকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তথ্য থাকলেও ক্যাম্পে অভিযান চালানো যায় না। তা ছাড়া মাদক পাচারকারীর বেশির ভাগ দুর্গম এলাকার হওয়ায় সহজে ওই এলাকায় যেতে পারেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নানা সীমাবদ্ধতায় পুলিশ চাইলেই শরণার্থী ক্যাম্পে অভিযান চালাতে পারে না। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ক্যাম্প রয়েছে ৩৪টি। সেখানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ক্যাম্পগুলোয় অন্তঃকোন্দলের জেরে খুন-গুম, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড প্রতিনিয়ত ঘটছে। রোহিঙ্গা উপস্থিতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জটিলতা তৈরি করছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে অর্থনৈতিক ও ভূরাজনীতির বিবেচনায় দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দানা বেঁধে উঠতে পারে। সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়।

সর্বশেষ খবর