মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

অর্থনীতিতে সুবাতাস

ফিনিক্স পাখির উপমা বাংলাদেশ

বাঙালি জাতিকে তুলনা করা যায় রূপকথার ফিনিক্স পাখির সঙ্গে। ভস্মের মধ্য থেকে যে পাখি উড়াল দেওয়ার সক্ষমতা দেখায়। ১৯৭১ সালের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। ১ কোটি মানুষ দেশছাড়া হয়েছিল হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর ভয়ে। লাখ লাখ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছিল দখলদাররা। দেশের রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কলকারখানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পণের পর দেশে চাষাবাদের জন্য লাঙ্গল ও হালের বদলের অভাবে হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি থেকে যায়। বাংলাদেশকে ব্যঙ্গ করে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে অভিহিত করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের গডফাদারের ভূমিকা পালনকারী একটি দেশের ক্ষমতাধর মন্ত্রী। কিন্তু বাংলাদেশ গত চার যুগে নিজেদের পুনরুত্থানের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে এ জাতি হারতে জানে না। করোনাভাইরাস ও সিরিজ বন্যায় দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা দেখিয়েছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা পাড়ের সাহসী জাতি। করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের অনেক দেশই এখনো ঘুরে দাঁড়াতে না পারলেও বাংলাদেশ এ সংকট খুব ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছে বলে মনে করে এডিবি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ খাতগুলোর উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থায় করোনাভাইরা-সজনিত ক্ষয়ক্ষতি তেমন বড় কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। যে কারণে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ইতিমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। রপ্তানি আয়েও সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। আমদানি ব্যয় কম হওয়ায় ও রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দেশের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধিও সন্তোষজনক। মূল্যস্ফীতির চাপও মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও বন্যার প্রভাব কেটে গেলে শাকসবজিসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্য কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের আবাসন খাত আবারও পুরনো অবস্থায় ফিরছে। এ সাফল্য সম্ভব হয়েছে দেশবাসীর দৃঢ় মনোবল ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে। এগিয়ে চলার পথে যা এ জাতির পাথেয় বলে বিবেচিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর