বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড

অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখবে

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান সংযোজন করে গতকাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। এর আগে সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে আইনের খসড়াটি অনুমোদন করা হয়। দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বেশ কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জনমনে দেখা দেয় ব্যাপক ক্ষোভ। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে প্রদর্শিত হয় বিক্ষোভ। এ-সংক্রান্ত কড়া আইন প্রণয়নের মাধ্যমে জনইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখাল সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ব্যাপক জনমত গড়ে ওঠায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধগুলো কঠোরভাবে দমনের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপধারা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ উপধারায় বিধান ছিল, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব আসে নারী বা শিশু ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। সমাজে নারী বা শিশু নির্যাতন কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপধারার অধীন ধর্ষণের অপরাধের জন্য মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদানের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সংশোধন করা প্রয়োজন। বর্তমানে সংসদের অধিবেশন না থাকায় এবং আশু ব্যবস্থা গ্রহণ খুবই জরুরি হওয়ায় আইনটি অধ্যাদেশ আকারে জারির লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়। আইনের সংশোধনী সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় তিনি সংবিধানের ৯৩(১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ আকারে জারি করেছেন। দুনিয়ার যেসব দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। এ ধরনের অপরাধের একটি অতিক্ষুদ্র অংশই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর গোচরে আনা হয়। আশা করা যায় মৃত্যুদন্ডের বিধান ধর্ষকদের সামাল দিতে কিছুটা হলেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপব্যবহারের প্রবণতা রোধেও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকা জরুরি।

সর্বশেষ খবর