বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

মাছ চাষে সাফল্য

বৈজ্ঞানিক গবেষণাও বাড়াতে হবে

মাছে ভাতে বাঙালি- এ পরিচয় সমুন্নত রাখতে গত এক দশকে দেশে মাছের চাষ বেড়েছে আশাজাগানিয়া গতিতে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) রিপোর্ট অনুযায়ী, বিগত ১০ বছরের হিসাবে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বে দ্বিতীয়। প্রাকৃতিক জলাশয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পরিবেশবান্ধব ও উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রম গ্রহণের ফলে মাছ উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। মাছ চাষের গতি বৃদ্ধিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। এ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা গত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৪টি নতুন জাতের মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবনসহ ৭০টি উন্নত প্রযুক্তি ও চাষাবাদ কৌশল মাছ চাষিদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এসব মাছ এখন নদী ও খাল-বিল ছাড়াও কৃষকের খামার কিংবা পুকুরেও উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে রুই, কই, পাঙ্গাশ, কাতলা, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প ও চিংড়ির দাম কমেছে। দেশের চাহিদা পূরণ করে ব্যাপক পরিমাণের মিঠা পানির মাছ এখন বিদেশেও রপ্তানি শুরু হয়েছে। এফএওর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বের যেসব দেশে মাছের চাষ বেশি বাড়বে তার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশবাসীর আমিষ চাহিদা পূরণে চাষের মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে মাছ চাষ হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও রাখছে অবদান। মাত্র দুই দশক আগে দেশে চাহিদা অনুযায়ী মাছের জোগান পাওয়া যেত না। বিদেশ থেকে প্রচুর মাছ আমদানি হতো। এখন দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে মাছ রপ্তানির মাধ্যমে। দেশ থেকে যেসব জাতের মাছ হারিয়ে যাচ্ছিল মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কল্যাণে সেগুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। জিন ব্যাংক গঠন করে ৬৪ জাতের মাছ ইতিমধ্যে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মাছ চাষে আধুনিক প্রযুক্তি

নিশ্চিত করা সম্ভব হলে এটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। মাছ চাষ বৃদ্ধিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণাও বাড়াতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর