বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ইমপিচমেন্ট

১৭৮৬ সালে বার্ক কমন্স সভায় হেস্টিংসের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনেন। এগুলো পরে লর্ড সভায় আলোচিত হওয়ার কথা। রোহিলা যুদ্ধসংক্রান্ত প্রথম প্রস্তাবটি কমন্স সভায় উত্থাপিতই হলো না। কিন্তু চৈৎ সিংহ-সংক্রান্ত প্রস্তাবটি ১৭৮৭ সালের অন্যান্য প্রস্তাবের সঙ্গে পাস হয় এবং ১৭৮৭ সালের ১০ মে হেস্টিংসকে ইমপিচ করা হয়।

বিচারকাজের শুরুর দিকে পার্লামেন্টে দর্শকের ভিড় জমে। কিন্তু ১৭৯১ সালের ৩০ মে’র মধ্যে যখন হেস্টিংসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমাপ্ত হয় তখন প্রায় কারোরই সন্দেহ থাকে না যে, অভিমত এখন হেস্টিংসের অনুকূলে। ফরাসি বিপ্লবের ঘটনাপ্রবাহ ব্রিটিশদের জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে এবং সাম্রাজ্য তখন আর লজ্জার ব্যাপার হিসেবে বিবেচিত না হয়ে শ্লাঘার হয়ে দাঁড়ায়। হেস্টিংসই এ সাম্রাজ্যের ত্রাণকর্তা সে দাবি তাই সহৃদয়তার সঙ্গে বিবেচিত হয়। ১৭৯৫ সালে লর্ড সভা যখন রায় প্রদান করে তখন তিনি প্রতিটি অভিযোগের ক্ষেত্রে বিপুল ভোটাধিক্যে নির্দোষ ঘোষিত হন।

আইনের রূঢ় বৈপরিত্য ‘দোষী’ বা ‘নির্দোষ’ দ্বারা হেস্টিংসের কর্মজীবনের মতো জটিল কর্মজীবনের মূল্যায়ন সঠিক বলে বিবেচিত হওয়া কাম্য নয়। তাকে বার্ক যে অতিমাত্রায় আক্রমণাত্মক ভাষায় নিন্দা করেছেন তা গ্রহণ করা দায়। দোষী সাব্যস্ত হওয়া দূরে থাক তাকে যে ইমপিচমেন্ট করা হয়েছিল তাই এখন খুব কম লোকই মেনে নিতে চাইবেন। অন্য পক্ষে তিনি সৎ উদ্দেশ্যে যে ছোটখাট দু-একটি নিন্দনীয় কাজ করেছিলেন তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠিন অভিযোগ আনীত হয়নি কিংবা তিনি শুধু ফ্রান্সিসের প্রতিহিংসা ও বার্কের শত্রুতার শিকার হয়েছিলেন এমন যুক্তিও অচল। ইমপিচমেন্টের সময় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, বিশেষ করে বেনারস ও অযোধ্যার ব্যাপারে তার স্বেচ্ছাচারিতা এবং কর্মজীবনে তার বিপুল পরিমাণ সঞ্চিত অর্থ ছিল উনিশ শতকের নৈতিকতা পরিপন্থী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর