শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা

সর্বোচ্চ আদালতের প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত

ধর্ষণের প্রমাণ অনেকাংশে ডাক্তারি পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল। মেয়েটির পুরো শ্বরীরে জোরজবরদস্তির লক্ষণ পরীক্ষা করা হয়। যোনীপথ, যৌনাঙ্গ ও আশ্বপাশ্ব থেকে নমুনা নিয়ে বীর্যের উপাদান খোঁজা হয়। অভিযোগকারীর রক্তসহ আলামতের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। বয়সও নির্ণয় করা হয়। ডিএনএর নমুনা পেলে পরীক্ষা হয়। আঘাত ও জোরজবরদস্তি বোঝার জন্য ‘দুই আঙ্গুলি’ পদ্ধতিটি নিষিদ্ধ করেছিল হাই কোর্ট। এবার বলা হলো, ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা না হওয়ার কারণে মামলা অপ্রমাণিত বলে গণ্য হবে না। বরং ভিকটিমের মৌখিক সাক্ষ্য ও অন্যান্য পারিপার্শি¦ক সাক্ষ্য দ্বারা আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ভিত্তিতেই আসামিকে সাজা প্রদান করা যেতে পারে। ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে আসামির আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। খুলনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত এক আসামির সাজা বহাল রেখে হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। সম্প্রতি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ্ব করেছে হাই কোর্ট। আদালত বলেছে, একটি মামলায় ঘটনার দীর্ঘ ২১ দিন পর ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। কিন্তু ভিকটিমের সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য হওয়ায় আসামিকে প্রদত্ত নিম্ন আদালতের সাজা আপিল আদালত বহাল রেখেছে। ফলে শুধু ডাক্তারি পরীক্ষা না হওয়ার কারণে ধর্ষণ প্রমাণ হয়নি, এ অজুহাতে আসামি খালাস পেতে পারে না। ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বন্ধের জন্য কঠোর আইন যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সে আইনের যথাযথ প্রয়োগ। ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের খবর যত বেশি পাওয়া যায়, এসব অপরাধের দায়ে অপরাধীদের শাস্তির দৃষ্টান্ত তার চেয়ে অনেক কম। তাই ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংস অপরাধের রাশ্ব টেনে ধরার জন্য প্রথম কর্তব্য এসব অপরাধের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে গতি সঞ্চার করা।

সর্বশেষ খবর