রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ভবিষ্যৎ হোক নিরাপদ খাদ্যে সমৃদ্ধ

শাইখ সিরাজ

ভবিষ্যৎ হোক নিরাপদ খাদ্যে সমৃদ্ধ

‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’ অন্নদামঙ্গল কাব্যে ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের এ প্রার্থনা-বাক্য মূলত প্রতিটি সভ্য জাতির প্রার্থনা। যুগ যুগ ধরে মানুষ সাধারণত নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ রচনা করতে চেয়েছে। চেয়েছে নিরাপদ এক পৃথিবী গড়তে। কিন্তু জনসংখ্যার বিস্ফোরণে বর্ধিত মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দেওয়ার চ্যালেঞ্জটাকেই আমাদের আগে মোকাবিলা করতে হয়েছে। খাদ্যের তাগিদে মাটির বুক থেকে শস্য কেড়ে এনেছি। অধিক উৎপাদনের নেশায় বলা চলে মাটির ওপর এক ধরনের অত্যাচারই করে চলেছি দিনের পর দিন। অধিক রাসায়নিক প্রয়োগ করে, ইচ্ছামতো কীটনাশক ছিটিয়ে মাটির গুণ নষ্ট করে দিয়েছি; যার বিরূপ প্রভাব আমরা নিজেরাই অনুভব করতে পারছি। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রেখে যাচ্ছি ভয়াবহ হুমকির মুখে। তবে কেউ কেউ ঠিকই বুঝতে পারছেন মাটির গুরুত্ব। মনে পড়ে ২০১০ সালে নীলফামারীর অন্নপূর্ণা জৈবসার কারখানার স্বত্বাধিকারী রামনিবাস আগরওয়ালা এক সাক্ষাৎকারে আমাকে বলেছিলেন, ‘মাটি হচ্ছে মা। মাটি বলছে, তুমি আমাকে ১০ কেজি বীজ দিলা, এক মণ সার দিলা, তোমাকে বিনিময়ে কী দিলাম! ৫০ মণ ধান দিলাম, ৫০ মণ নাড়া দিলাম। তুমি কি কখনো চিন্তা করে দেখেছ, এটা কোথা থেকে এলো! আমার শরীরের গচ্ছিত সম্পদ থেকে তোমাকে দিয়েছি। তুমি এক কাজ কর, ধানটা তুমি নাও, নাড়াটা আমাকে দাও। তুমি তো আমার সন্তান, তোমাকে বাঁচানো আমার কর্তব্য। চিন্তা করছি আমি মরে গেলে তোমার কী হবে? কাজেই তুমি তোমার স্বার্থে আমাকে বাঁচিয়ে রাখো।’

এ লেখাটা যখন লিখছি, অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর, বিশ্ব খাদ্য দিবস। এই সময়ে এসে পৃথিবীর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে খাদ্য আর কৃষির গুরুত্ব আজ প্রতিটি মানুষ উপলব্ধি করছে। করোনার শুরুতে সারা পৃথিবী যখন লকডাউনে স্থবির তখন উন্নত বিশ্ব থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের দেশে দেশে খাদ্য নিয়ে এক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সেই কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সর্বত্রই এখন শুরু হয়েছে নানামুখী তৎপরতা। এ বছর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএও খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- গ্রো (Grow), নারিশ (Nourish), সাসটেইন Sustain), টুগেদার (Together)| Our actions are our future. সত্যিকার অর্থেই আমাদের কাজই আমাদের ভবিষ্যৎ। এখন কৃষি তথা খাদ্য উৎপাদনের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। ভালো ফসলের জন্য সবার আগে ভাবতে হবে মাটির স্বাস্থ্যের কথা।

বর্ধিত জনসংখ্যার মুখে খাবার তুলে দিতে অধিক ফলনের বিকল্প নেই। সত্যি বলতে, ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়তে কৃষির বাণিজ্যিক প্রসার বাড়াতে হবে। বাড়ছেও। কিন্তু এর সব চাপই পড়ছে মাটিতে। ফসলের বেশি ফলন নিশ্চিত করতে প্রয়োগ হচ্ছে নানা রকম সার। এক ফসল উঠতে না উঠতেই মাটিকে নিতে হচ্ছে অন্য ফসল ফলানোর দায়িত্ব। অর্থাৎ ফসলের আবর্তনে মাটির কোনো বিরাম নেই। নেই জৈব উপাদানে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠার সুযোগ। মাটির সুরক্ষার কথা সব কৃষক ভাবছে না। মাটি হারিয়ে ফেলছে তার নিজস্ব প্রাণশক্তি, জৈব গুণ। আমি ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই মাটির জৈব উপাদান ও উর্বরা শক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে আসছি। দেখেছি কোনো কোনো এলাকায় কৃষক আগে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা করছে, তারপর ফসলের কথা ভাবছে। আপনাদের অনেকেরই মনে থাকতে পারে, হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে জৈবসার উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করার এক অভিযান শুরু করেছিলাম। সে সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল কৃষক পরিবারে গিয়ে গিয়ে আমরা হাতে-কলমে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেছিলাম। অনেকেই এ কাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। সে সময় সারা দেশে অনেক জৈবসার উদ্যোক্তা গড়ে ওঠেন। মনে পড়ছে নরসিংদীর সেলিনা জাহান ছিলেন তাদের একজন। তিনি বহু মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন কেঁচো সার উৎপাদনে। এর ধারাবাহিকতায় ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার মহেশ্বচাঁদা গ্রামটিই হয়ে ওঠে কেঁচো সারের গ্রাম। এখন দেশের অনেক গ্রামই জৈবসার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বেশ অগ্রসর হয়েছে। সারা পৃথিবীর মতো আমাদের দেশেও অর্গানিক ফল-ফসলের কদর বাড়ছে। ফলে দেশের বহু তরুণ উদ্যোক্তা ব্যক্তিগতভাবে জৈব কৃষি নিয়ে কাজ করে বেশ সাফল্যও অর্জন করেছেন। কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট করতে গিয়ে গত কয়েক বছর ধরে গ্রামের নারী কৃষকদের জৈব কৃষিতে আগ্রহ দেখেছি।

জৈব কৃষির একটি সফল দৃষ্টান্ত গড়ে ওঠে কুষ্টিয়ায়। ২০১৪ সালের কথা। কয়েকজন শিক্ষিত তরুণ গড়ে তুলেছিলেন কেঁচো সার উৎপাদনের খামার। সেটি ছিল খুব আশাজাগানিয়া উদ্যোগ। বাংলাদেশে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা পর্যন্ত আগ্রহ নিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন ওই উদ্যোগ। তিনি উদ্যোগটি দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন। মজীনা তরুণদের বলেছিলেন, My dad says, the smell of cow dang is the smell of money.. (আমার বাবা বলতেন, গোবরের গন্ধ হচ্ছে টাকার গন্ধ) অর্থাৎ গোবর থেকেই উপার্জন করা সম্ভব। কুষ্টিয়ার সেই তরুণরাও হয়তো মজীনার এ কথাটির তাৎপর্য অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। আর তাই সেই তরুণ উদ্যোক্তারা জৈবসার উৎপাদনের উদ্যোগটি বেশ ভালোভাবেই ধরে রেখেছেন। শুধু তাই নয়, কার্যক্রমটি এখন অনেক বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে। বেড়েছে ব্যাপ্তি ও বৈচিত্র্য। বৃদ্ধি পেয়েছে কেঁচো সার উৎপাদন কারখানাটির আয়তন। উৎপাদন ব্যবস্থাপনা শহর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গ্রামে। এ উদ্যোগটির অন্যতম উদ্যোক্তা কাওনাইন রাসেলের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি জানান, বছর দশেক আগে তারা জৈবসার উৎপাদন করতেন ১০ হাজার কেজি। আর সেই উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ কেজিতে। জৈবসার ব্যবহারের উপকারিতা কৃষক বুঝে গেছে। আর এ বিপুল পরিমাণ জৈবসার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তাদের চালাতে হয়েছে দীর্ঘ উদ্বুদ্ধকরণ অভিযান। শত শত কৃষককে বোঝাতে হয়েছে জৈবসারের প্রয়োজনীয়তা। এ কথা তো ঠিক, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি পাল্টেছে। কৃষক আর শুধু ধান বা পাট চাষে সীমাবদ্ধ নেই। কৃষক এখন চাষ করছে সবজি ও ফল। বাহারি ফল-ফসলে সমৃদ্ধ তার চাষের জমি। যদিও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার খুব একটা কমেনি। তবে ফসল বৈচিত্র্যের সঙ্গে জৈবসারের ব্যবহার ও মাটির স্বাস্থ্যের কথা কৃষক ভাবতে শুরু করেছে।

বলছিলাম কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তিন তরুণের জৈবসার তৈরির উদ্যোগের কথা। ওই অঞ্চলটিতে এখন ফলছে নানারকম ফল-ফসল। একদিকে যেমন উচ্চমূল্যের ফল-ফসল ড্রাগন, পেয়ারা, মাল্টা চাষ করছে কৃষক, অন্যদিকে চাষ করছে ভুট্টা, ধান, আখ থেকে শুরু করে লাউ-কুমড়াসহ বহু ধরনের শাকসবজি। ফসলের প্রাচুর্যই জানান দিচ্ছে সেখানকার মাটির সুস্বাস্থ্যের কথা।

কৃষকের বাড়িঘরের চিত্র পাল্টে গেছে। বেড়েছে পাকা বাড়ির সংখ্যা। কৃষকের এ সমৃদ্ধি কয়েক বছর আগেও ছিল না। গত কয়েক বছর ফসল উৎপাদনের খরচ নেমে এসেছে। অন্যদিকে উৎপাদন কৌশলেও এসেছে পরিবর্তন। জৈব কৃষি সম্পর্কে এসেছে নানামুখী সচেতনতা। কৃষক এখন নতুন নতুন ফসল ও প্রযুক্তি বিষয়ে ধ্যান-ধারণা রাখে। মাচা ভরা লাউ, পটোল মানেই কৃষকের পকেট ভরা টাকা। কথা বলেছি দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে। লেখাপড়া শিখে সবজি উৎপাদনে যুক্ত হয়েছেন জালালউদ্দিন। খেতের ফসল থেকে আয় করেন ৫০ হাজার টাকা। নিজের পৈতৃক ১৫ বিঘা জমিকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করে আদর্শ কৃষক হতে চান তিনি। আর তাতে জৈবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। জানা গেল, জৈবসার ব্যবহার করে লাউ চাষ করেছে সে অঞ্চলের ৮০ ভাগ কৃষক। অথচ চার বছর আগেও এখানকার কৃষক শতভাগ নির্ভর করত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ওপর। এখন মাটির উর্বরতা বাড়িয়ে চাষাবাদ করায় ফসলের ফলন যেমন নিশ্চিত হচ্ছে, আবাদও হচ্ছে টেকসই। ফসল উৎপাদনের ব্যয়ও কমে গেছে। এজন্য ছোট বড় কোনো জমিই পড়ে থাকছে না। সবজির এ উৎপাদনকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে উঠেছে বিশাল এক সবজি বাজার। সূর্য তখন ছড়াচ্ছে সকালের তির্যক আলো। মাথায় ডালি করে লাউ আসছে। কৃষকের কাছ থেকে দরদাম করে লাউ কিনছে পাইকাররা। সে লাউ থরে থরে সাজানো হচ্ছে। অন্যদিকে আরও সব সবজির পসরা। কথা বলে জানা গেল এ দৃশ্য প্রতিদিনের। প্রতি সকালেই মহিষকু-ি বাজার মৌসুমি ফসলে ভরে ওঠে। ক্রেতা-বিক্রেতারাও জানাল, যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন তারা অনেক ভালো আছে।

বলছিলাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ খাদ্যের জোগান দিতে জৈব কৃষির বিকল্প নেই। কিন্তু আমরা বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহার করে যেমন খাদ্যটিকে অনিরাপদ বানিয়ে ফেলে স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি করছি, তেমনি নষ্ট করছি মাটি। অথচ আমরা উদাহরণ হিসেবে নিতে পারি হিমালয় পর্বতমালার সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমকে। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি সিকিমের বড় আকর্ষণ দিগন্তবিস্তৃত অর্গানিক ফসলের মাঠ। ২০১৬ সালে প্রথম রাজ্য হিসেবে সিকিমকেই রাসায়নিকমুক্ত বা অর্গানিক রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দেয় ভারত। ২০০৩ সালেই প্রথম সেখানে কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে কীটনাশক ও বালাইনাশকের মতো রাসায়নিকের ব্যবহার থেকে সরে আসে সেখানকার কৃষক। জৈব কৃষির শুরুর দিকে ফসলের ফলন কমে যায়, প্রচুর লোকসানের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু সরকার সে সিদ্ধান্তে অবিচল থেকে কৃষকের ক্ষতিপূরণ দিয়ে গেছে। জৈবসার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয় কৃষকের কাছে সহজলভ্য করে দিয়েছে। ফলে দু-তিন বছর পর সেখানকার কৃষক অবাক হয়ে লক্ষ্য করল ফসল ঠিক আগের মতোই ফলছে। মাটির যত্ন নিলে ঠিকই ভালো ফসল ফলে। সিকিমের কৃষক একসময় রাসায়নিকের ব্যবহার ছাড়া চাষাবাদের কথা ভাবতেই পারত না, অথচ সেখানে এখন কীটনাশকের ব্যবহার রীতিমতো অপরাধ। ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদন থেকে জানলাম, জমিতে কেউ কীটনাশক ব্যবহার করলে ১ হাজার ৪০০ ডলার বা সমপরিমাণ পর্যন্ত অর্থ জরিমানা, এমনকি তিন মাসের জেলের বিধানও রাখা হয়েছে আইনে। সরকারের একটি ভালো উদ্যোগে কৃষিতে বিপ্লব ঘটে গেছে। সিকিমের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি অর্গানিক কৃষির মডেল সিকিমকে নতুন করে দেখতে শুরু করেছে পর্যটকরা। ফলে পর্যটক বেড়েছে আগের তুলনায় ৭০ ভাগ বেশি। সিকিমের এ জৈব কৃষি উদ্যোগ আমাদের জন্য হতে পারে অনুপ্রেরণা। আমাদের কৃষককে বোঝাতে হবে, রাসায়নিক সার ফসলের খাদ্য হতে পারে, কিন্তু জৈবসার মাটির খাদ্য। মাটির খাদ্য না দিলে মাটি শুধু উর্বরা শক্তিই হারাবে না, মাটি হয়ে পড়বে বন্ধ্যা। এ সত্যটি সবারই উপলব্ধি করা প্রয়োজন। আজ কুষ্টিয়ায় জৈবসার উৎপাদন তথা জৈব কৃষির যে তৎপরতা শুরু হয়েছে, এমন নজির হয়তো দেশের অনেক স্থানেই গড়ে উঠেছে। আশা করব, সবখানেই জৈব কৃষির তৎপরতা শুরু হবে। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা যেমন ফসল উৎপাদনের একটি ভালো চর্চা রেখে যেতে পারব, একই সঙ্গে জৈব কৃষি চর্চার মাধ্যমে দেশে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। এর মাধ্যমেই সূচিত হতে পারে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের টেকসই ব্যবস্থাপনা।

লেখক : মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।  

[email protected]

সর্বশেষ খবর