রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ভাসানচর আশ্রয়ণ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যেন হেলাফেলা না হয়

সরকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য নোয়াখালীর চরঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসানচরে প্রায় ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা খরচ করে আশ্রয়স্থল নির্মাণ করেছে। যেখানে ১ লাখ ১ হাজার ৬০ জনের বসবাসের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে বাজার, হাসপাতাল, ক্লিনিক, সুপার শপ, অফিস ও শেল্টার হাউস। একসময় ভাসানচরে কিছু গাছ ও মহিষ ছাড়া কিছুই ছিল না। কিন্তু নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভাসানচরকে একটি সুবিন্যস্ত বসতি হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। যাকে আধুনিক শহর বলেও অভিহিত করা যায়। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে মানবেতর পরিবেশে। বাংলাদেশ যৌক্তিক কারণেই চায় এ মুহূর্তেই তারা তাদের স্বদেশে সম্মানের সঙ্গে ফিরে যাক। তবে তাদের প্রত্যাবাসনের আগে আবাসস্থল হিসেবে সাজানো হয়েছে ভাসানচরকে। এখানে যেসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে তাতে এক রুমে চারজনের থাকার জন্য দ্বিতল বিছানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন ১৬টি রুম, নারী-পুরুষের জন্য আলাদা বাথরুম, টয়লেট ও রান্নাঘর নিয়ে বানানো হয়েছে একেকটি বাড়ি। এমন ১২টি করে বাড়ি নিয়ে বানানো হয়েছে একেকটি পাড়া বা ক্লাস্টার। বিশাল এ প্রকল্পে এমন ১২০টি ক্লাস্টার বানানো হয়েছে। প্রতি ক্লাস্টারে দুর্যোগ সময়ের জন্য বানানো হয়েছে চার তলার একটি করে শেল্টার। ২৬০ কিলোমিটার গতির ঝড়েও অটুট থাকবে এসব শেল্টার। দুর্যোগে ১ হাজার মানুষ ও ২০০ গবাদি পশু আশ্রয় নিতে পারবে শেল্টারগুলোয়। তবে স্বাভাবিক সময়ে বসবাস করবে ৯২ জন এবং আয়োজন হবে সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রাথমিক শিক্ষার। এমন মোট ১০০ শেল্টার হাউস আছে ভাসানচরে। প্রাথমিকভাবে শেল্টার ভবন হিসেবে তৈরি হলেও ২০টি চার তলা ভবনকে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ ভিন্ন কাজে। ভাসানচরে অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা গেলে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোয় যে মানবেতর পরিবেশ বিরাজ করছে তার অবসান ঘটবে। তবে সরকারের সব মনোযোগ বজায় রাখতে হবে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিকে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর