মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

পাড়ায় পাড়ায় মাস্তান গ্রুপ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে

একসময় তরুণরা দল বেঁধে মহল্লায় গড়ে তুলত পাঠাগার, ফিল্মক্লাব, ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব। পরিবেশ রক্ষায় গড়ে তুলত সবুজ বনায়ন। কখনো মেডিকেল ক্যাম্প বসিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দিত। তাদের উদ্দীপনায় অনেকেই পরীক্ষায় ভালো ফল করত। সেই সামাজিক সম্প্রীতি ভুলে এখন পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠেছে মাস্তান গ্রুপ। তারা মাদক সেবন, ধর্ষণ, হত্যা, ইভ টিজিং, ছিনতাই, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মারামারিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এই কিশোরদের বড় অংশ নিম্নবিত্ত। ঢাকাসহ দেশের ছোট-বড় শহরে দরিদ্র পরিবারের লাখ লাখ কিশোর বড় হয় অযত্ন-অবহেলায়। পারিবারিক বন্ধন ক্রমেই শিথিল হয়ে যাওয়া, সামাজিক অবক্ষয়, অস্থিরতা কিশোর অপরাধ বাড়ার অন্যতম কারণ। কিশোরদের একটি অংশ ক্ষমতাসীন দল বা সহযোগী সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এলাকার ‘প্রভাবশালী’ বড় ভাইদের হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অলিগলি। গ্রুপে গ্রুপে দ্বন্দ্বে খুনোখুনি করছে। থেমে নেই সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। তারা গোপন ও প্রকাশ্যে মসজিদ-মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে গ্যাং কালচার গড়ে তুলছে। গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে পাড়ায় পাড়ায় মাস্তান গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে যে কোনো সময় শুরু হবে বিশেষ অভিযান। ব্যবস্থা নেওয়া হবে উঠতি মাস্তান গ্রুপ ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও। কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা ও গডফাদার কোথায় কীভাবে কিশোর অপরাধীদের নানা কৌশলে ব্যবহার করছে তা চিহ্নিত করা হচ্ছে। সম্প্রতি সরকারের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। কিশোরদের মানসিক বিকাশে পারিবারিক ও সামাজিক ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উৎসাহিত করতে হবে। তাদের উগ্রবাদিতা রুখতে এখনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে হবে।

সর্বশেষ খবর