শিরোনাম
বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষণ মামলায় সাত দিনে রায়

অভিনন্দন বিচারিক আদালতকে

দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন সংক্রামক ব্যাধির মতো বিস্তার লাভ করেছে বিচারহীনতার সংস্কৃতির জন্য। আমাদের দেশে ধর্ষণের বিচার মানেই প্রকারান্তরে ধর্ষিতাকে মহাবিড়ম্বনায় ফেলা। আর বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় বাদীপক্ষের অবস্থাও ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচির মতো দাঁড়ায়। সিলেট কিংবা নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ধর্ষণ-গণধর্ষণের জন্য ধর্ষণ সম্পর্কিত মামলার তদন্তে অবহেলা ও বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতার দায় কোনোভাবেই এড়ানো যায় না। হতাশার মধ্যে আশার আলো জ্বালিয়ে বাগেরহাটে শিশু ধর্ষণ মামলার রায় মিলছে মাত্র সাত দিনের মধ্যে। জেলার মোংলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় মা-বাবাহারা সাত বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে আসামি আবদুল মান্নান সরদারকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২-এর বিচারক মো. নূরে আলম সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় প্রদান করেন। মাত্র সাত কার্যদিবসে রায় ঘোষণার মাধ্যমে দেশের বিচারাঙ্গনে দ্রুত বিচারের অনন্য নজির স্থাপিত হলো। রায়ে আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদ- ভোগ করতে হবে তাকে। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মাকোড়ডোন গ্রামের ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় মা-বাবাহারা সাত বছর বয়সী শিশুটি মামার আশ্রয়ে ছিল। আসামি পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রতিবেশী আবদুল মান্নান সরদারকে শিশুটি নানা বলে ডাকত। ৩ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মান্নান শিশুটিকে বিস্কুট খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ঘরে ডেকে নেয়। এরপর জোরপূর্বক ধর্ষণ করলে সে রক্তাক্ত হয়। শিশুটির আর্তচিৎকারে তার মামা ও এলাকাবাসী ছুটে এলে ধর্ষক পালিয়ে অন্য ঘরে আশ্রয় নেয়। পুলিশ এসে আসামিকে আটক করে মোংলা থানায় নিয়ে যায়। বাগেরহাটের মোংলা থানাপুলিশ প্রমাণ করেছে সদিচ্ছা থাকলে যে কোনো মামলার দ্রুত তদন্ত সম্ভব। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালও প্রমাণ করেছে মাত্র সাত দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা কঠিন কিছু নয়। বিচারব্যবস্থার প্রতি দেশবাসীর আস্থা বাড়াতে শুধু ধর্ষণ নয়, সব মামলার ক্ষেত্রে এটি অনুকরণীয় বলে বিবেচিত হতে পারে। তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ও ট্রাইব্যুনালকে আমাদের অভিনন্দন।

সর্বশেষ খবর