পুরো বিশ্বই এখন করোনাযুদ্ধে লিপ্ত। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে হিমশিম খাওয়া রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতিও বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় অগণিত মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বেঁচে থাকার তাগিদে তারা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং রয়েছে অনাহার-অর্ধাহারের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে। করোনায় তছনছ হয়ে যাওয়া অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরবে কিনা, কর্মহীন বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হবে কিনা, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিতকরণে কোনো উন্নতি হবে কিনা- এ প্রশ্নগুলো এখন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। যদিও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে এরই মধ্যে লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। তবু দেশজুড়ে ক্ষুধার্ত ও কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছে শ্রমজীবী, গার্মেন্টসহ ক্ষুদ্র শিল্পে কর্মরত মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দার মধ্যে বহু শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে শহর ছাড়ছে। আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় এত দিন সঞ্চয় ভেঙে কোনোরকম টিকে ছিল কাজ-হারানো নিম্নবিত্ত শ্রেণি। এখন তারা হতাশায় নিমজ্জিত। আসলে যত দ্রুত ব্যক্তি খাত ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, তত দ্রুত সংকট কাটবে। আবার সবার কর্মসংস্থানের সাধ্য সহজ কিছু নয়। আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে। নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য করতে হবে অর্থায়নের ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা আবার পুরোপুরি চাঙ্গা হলেই সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। এখনো শপিং মল, বিউটি পারলার, সিনেমা হল, বিনোদন কেন্দ্র, রেস্তোরাঁর মতো অনেক ব্যবসা পুরোপুরি চালু হয়নি। সংকট উত্তরণে শ্রমঘন ছোট ও মাঝারি শিল্প খাতে বেশি নজর দিতে হবে। শুধু শহর এলাকায় নয়, গ্রামে গঞ্জে যে এসএমই খাত রয়েছে, তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সবাইকে সমান সুবিধা দেওয়া গেলে তাতে অর্থনীতি দ্রুতই আবার ঘুরে দাঁড়াবে।