করোনার এই সময়ে শিক্ষা নিয়ে সুপরিকল্পিত কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না। অনেকেই ভাবছেন, জীবন বাঁচানোর কার্যক্রম যেখানে পর্যাপ্ত নয়, সেখানে শিক্ষা নিয়ে কথা বলা কতটা স্বাভাবিক? কিন্তু শিক্ষা নিয়ে ভাবতে হবে জীবন বাঁচানোর জন্যই। শিক্ষাকে অবহেলা করে আমরা আগামীর করোনামুক্ত পৃথিবীতে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে পাব না। সুতরাং শিক্ষা নিয়ে আমাদের সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী পরিকল্পনা অত্যাবশ্যক। জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করলেও প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীদের ‘লার্নিং গ্যাপ’ তৈরি হয়েছে। তাদের বর্তমান শ্রেণির সিলেবাস শেষ না করে ওপরের ক্লাসে তুলে দিলে তারা ওই ক্লাসের সিলেবাস বুঝতে পারবে কিনা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। অটোপ্রমোশন-অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষা সংকট উত্তরণের সঠিক সমাধান নয়। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ঐকিক নিয়ম না শিখিয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ওই বিষয়ে উচ্চতর কোনো গণিতের সমাধান করতে দিলে শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি সেমিস্টার, ইয়ারের ওপর নির্ভর করে পরের সেমিস্টারের সিলেবাস তৈরি হয়। ভিত্তি দুর্বল রেখে শিক্ষার্থীরা যদি ওপরের শ্রেণিতে যায় তাহলে তার ফল হবে ভয়াবহ। এটি শিক্ষার গুণগত মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনিবার্যভাবে সেশনজটে পড়বে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শেষ করতে না পারলে চাকরির প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। মাঝে অনলাইন এডুকেশনের নামে অর্থ অপচয় হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যদি এ সিলেবাস শেষ করতে পারে তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার যে সিলেবাস আছে তা বুঝতে শিক্ষার্থীদের গলদঘর্ম পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে কখনো প্রয়োজনীয় জ্ঞান শিক্ষার্থীকে দেওয়া সম্ভব নয়। দেশে অফিস-আদালত, গণপরিবহন চালু হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে দ্রুততম সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে। সময়ের শূন্যস্থান নয়, শেখার শূন্যস্থান দূর করতে হবে।