সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক

মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন

শোকাহত দেশবাসীর ভালোবাসা ও ফুলেল শ্রদ্ধায় চিরবিদায় নিলেন বরেণ্য আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর আদ্-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি। পেশাগত জীবনে সব ধরনের রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সব সামরিক সরকারের আমলে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলায় নিপীড়িতদের পক্ষে লড়েছেন তিনি। রফিক-উল হক দর্শনে স্নাতকোত্তর ও আইনে স্নাতক ডিগ্রি নেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ফৌজদারি আইনে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়ায় স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী হন ১৯৬০ সালে। যুক্তরাজ্য থেকে ১৯৬২ সালে বার-অ্যাট-ল করে ঢাকায় এসে আইন পেশায় যুক্ত হন। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন খ্যাতিমান এই আইনজীবী। তিনি ১৯৮৯-৯০ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যে কোনো মামলায় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় তিনি ছিলেন অকুতোভয়। জীবনে অর্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন সমাজ ও মানবতার সেবায়। তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক এবং বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষক ছিলেন। বিভিন্ন আইন সংস্কারে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। তাঁর ব্যক্তিগত আয় থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে চিকিৎসার উন্নয়নে দান করেছেন। গড়ে তুলেছেন একাধিক হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নানা সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান আইনজীবী এবং সমাজসেবীকে হারাল। এ ক্ষতি পূরণীয় নয়। তিনি অকুতোভয় আইনজীবী হিসেবে আজীবন সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। নিজ কর্মগুণেই বিজ্ঞ এই আইনজীবী দেশের মানুষের কাছে  চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর