শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ওয়াসার পানি

প্রাকৃতিক উৎসের ব্যবহার বাড়াতে হবে

যে পদ্ধতিতে ঢাকাসহ অন্যান্য মহানগরীর অধিবাসীদের পানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর চেষ্টা চলে আসছে, তা ঝুঁকিপূর্ণ ও অদূরদর্শী। বড় শহরের মোট পানির চাহিদার ৭৮ শতাংশই তোলা হচ্ছে মাটির নিচ থেকে। ওয়াসা বলছে, কেবল ঢাকা মহানগরীতে তাদের বসানো গভীর নলকূপের সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে। আর বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন গভীর নলকূপের সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি। এই বিপুলসংখ্যক গভীর নলকূপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে দিনরাত অবিরাম পানি তোলা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা দুই দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ, যার ফলে আমরা গুরুতর সংকটে পড়ে যেতে পারি। প্রথমত, ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়, এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ বা ইকোসিস্টেমে ভারসাম্য ক্ষুণœ হয়। পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপচয়ও কম নয়। ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরের পানিতে আছে দুর্গন্ধ। পানিতে ভেসে আসে ময়লা। পানির জোগান ভূগর্ভ থেকে হয় বলে পানি বিশুদ্ধ ধরে নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা হয়। পাইপলাইনের ওয়াশ পয়েন্ট আউট নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পানিতে এ ময়লা ও দুর্গন্ধ হচ্ছে। রাজশাহী মহানগরীজুড়ে ওয়াসার পানি সরবরাহ লাইন আছে ৭১২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। দৈনিক প্রায় ৫ দশমিক ১০ কোটি লিটার পানি বিক্রি করছে ওয়াসা। অথচ ময়লা ও দুর্গন্ধময় পানি পান করে সাধারণ মানুষ নানা অসুখে ভুগছে। গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীলতা দূর করতে হবে। ভূ-উপরিস্থিত বিভিন্ন উৎস থেকে পানির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। বৃষ্টির পানি একটি ভালো উৎস, বর্ষা মৌসুমে তার প্রাপ্তিও অঢেল। ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সরকারি ভবনে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের জন্য একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। নির্দেশনাটির বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। এ নির্দেশনা সরকারি -বেসরকারি সকল পর্যায়েই বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কিছু মাত্রায় হলেও কমবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর