মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

দাহ্য ও বিস্ফোরক পদার্থ

বন্দর থেকে অপসারণের উদ্যোগ নিন

দেশের তিন সমুদ্রবন্দর এবং বেশ কয়েকটি স্থলবন্দরের গোডাউনে বিস্ফোরক ও দাহ্য জাতীয় কেমিক্যাল পণ্য মজুদ থাকায় এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বলা চলে বারুদের ওপর অবস্থান করছে দেশের অর্থনীতির অনুষঙ্গ এসব স্থাপনা। বিশেষ করে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে সামুদ্রিক বন্দরে কেমিক্যাল পণ্যের গোডাউনের বিস্ফোরণে ভয়াবহ যে মানবিক সংকটের উদ্ভব ঘটেছিল, তেমন বিপদ বাংলাদেশের সমুদ্র ও স্থলবন্দরগুলোর ঘাড়েও নিঃশ্বাস ফেলছে। আমদানিকারকরা তাদের আমদানিকৃত পণ্য ছাড়িয়ে না নেওয়ায় বন্দরের গোডাউনে দীর্ঘদিন মজুদ বিস্ফোরক ও দাহ্য কেমিক্যাল পণ্য অপসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ৫ টনের মতো মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক মজুদ রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পি-শেডে। এর মধ্যে হাইড্রোক্লোরাইড, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, বিপজ্জনক নানা পদার্থ ছাড়াও কিছু কস্টিক সোডা রয়েছে। স্মর্তব্য, রাসায়নিক বা কেমিক্যাল-জাতীয় পণ্য ধ্বংসের বিষয়ে অন্তত ১৩-১৪টি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নিতে হয়। এ বিষয়ে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয় সভা হয়েছে। যেসব রাসায়নিক কেমিক্যাল বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, সেগুলো দ্রুতই ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরক ও বিপজ্জনক পণ্য মজুদের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ায় তা এড়াতেই এমন ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর ছাড়াও সারা দেশের স্থলবন্দরগুলোয় বিপুল পরিমাণ দাহ্য ও বিস্ফোরক-জাতীয় দ্রব্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা ৬০ লট বিপজ্জনক কেমিক্যালসহ ২১১ লট পণ্য নিলামে তুলবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দেশে শিল্পোৎপাদনসহ নানা কাজে বিদেশ থেকে বিস্ফোরক ও দাহ্য কেমিক্যাল পণ্য আমদানি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে আমদানিকারকরা এসব পণ্য বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেন না। ফলে সেগুলো বছরের পর বছর গোডাউনে পড়ে থাকে। বন্দরের নিরাপত্তার জন্যও তা ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এ ঝুঁকি রোধে বিস্ফোরক ও দাহ্য পণ্য সময়মতো ছাড় না করলে নিলামে তোলাসহ আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর