বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ

ভ্যাট ও করের বোঝা কমাতে হবে

ইকোনমিক জোনে জমি ইজারার ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে কিনা প্রশ্ন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। ধারে-কাছের সব দেশ ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করলে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দিলেও বাংলাদেশের ইকোনমিক জোনে জমি ইজারার ওপর অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ যে বিনিয়োগ-বান্ধব সিদ্ধান্ত নয় তা সহজেই অনুমেয়। ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইউটিলিটি সার্ভিসের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ চার্জকেও বোঝা হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যাশিত সুযোগ-সুবিধার বদলে করদন্ডে আবদ্ধের চেষ্টা করলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। নতুন বিনিয়োগকারীরা ইকোনমিক জোন থেকে যেমন দূরে থাকবেন তেমন যারা ইতিমধ্যে বিনিয়োগ করে ফেলেছেন তারা তা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাববেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সস্তা শ্রম, অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজার ইত্যাদি ইতিবাচক পরিবেশ থাকলেও নীতি জটিলতা ও অবকাঠামোগত সংকটের পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করছে। করোনাকালে যখন দুনিয়াজুড়ে বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে, তখন বিনিয়োগকারীদের করভারে জর্জরিত করা আর যাই হোক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নয়। এমন অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হতাশ করবে। সরকার দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে শিল্পায়নের গতি বাড়াতে চায়। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সেরা উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে- এমন প্রত্যাশা সরকারের নীতিনির্ধারকরাও পোষণ করছেন। ইকোনমিক জোনের বিনিয়োগকারীদের ওপর করের বোঝা চাপানো প্রকারান্তরে সে প্রত্যাশাকে আহত করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে পড়বে। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতি দেশগুলোর একটি। ১৭ কোটি মানুষের এ দেশে কর্মসংস্থান বাড়ানো সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। ইকোনমিক জোনে ভ্যাট ও করের বোঝা চাপিয়ে বিনিয়োগকারীদের দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কিনা সময় থাকতে ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর