রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে চা চাষ

মান রক্ষার দিকেও নজর দিতে হবে

পঞ্চগড়ের হাজার হাজার মানুষের জীবনে চা চাষ ভাগ্য বদলের চাবিকাঠি হিসেবে দেখা দিয়েছে। পঞ্চগড়-সংলগ্ন ভারতের দার্জিলিংয়ের চা ছিল একসময় জগদ্বিখ্যাত। বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হয় সিলেটে এবং সেখান থেকে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামেও গড়ে ওঠে একের পর এক চা বাগান। কিন্তু গত তিন দশকে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ সংলগ্ন এলাকাগুলোয় বিস্তৃত হয়েছে চা চাষ। পরিকল্পিত উপায়ে চা বাগান গড়ে তোলার পাশাপাশি এলাকার তরুণ কৃষক নিজেদের ভাগ্য ফেরাতে চা চাষে উদ্যোগী হয়েছেন। এ এলাকার অর্গানিক চা বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পঞ্চগড়েই এখন চা চাষ হাজার হাজার মানুষের জীবিকার প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় চায়ের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে সমস্যা থাকলেও এলাকায় চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি ও বিদেশে চায়ের চাহিদা বাড়ায় সে দুর্দিন ঘুচেছে। কৃষকের ভাষ্য, কাঁচা চা-পাতার ভালো মূল্য পাচ্ছেন তারা। বর্তমানে ১ কেজি চা পাতার মূল্য ২১ থেকে ২৩ টাকা। কারখানার সংখ্যা ও আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সঠিক মূল্য পাচ্ছেন চাষিরা। চা পাতার ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এ করোনাকালেও পঞ্চগড়ে সচল হচ্ছে অর্থনীতির চাকা। অনেকের ভাগ্য বদলও হয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক অফিসের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চা রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে নিলাম বাজারে চায়ের দাম বেড়েছে। স্মর্তব্য, পঞ্চগড় জেলায় ২০০০ সালে চা চাষ শুরু হয়। বর্তমানে নিবন্ধিত চা চাষি রয়েছেন ৮৯১ জন। অনিবন্ধিত ৫ হাজার ১৮ জন। নিবন্ধিত ৯টি, অনিবন্ধিত ১৯টি চা বাগানসহ ৭ হাজার ৫৯৮ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। গত বছর ১৮টি চা কারখানায় ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ১১০ কেজি কাঁচা চা পাতা থেকে ৯২ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৫ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এবার উৎপাদন কোটি কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পঞ্চগড়ে চা চাষের বিকাশ দারিদ্র্যপীড়িত ওই এলাকার জন্য একটি সুখবর। যেসব জমিতে চা চাষ হয় সেসব জমিতে চা ছাড়া অন্য ফসল ফলানো কষ্টসাধ্য ও ততটা লাভজনক নয়। কৃষকের সুদিন ধরে রাখতে চায়ের মান রক্ষার দিকেও নজর দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর