সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কর্মসংস্থানে সংকট

অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে হবে

করোনাভাইরাসের ভয়াল আগ্রাসনের মধ্যেও বাংলাদেশের টিকে থাকার সাফল্য চোখে পড়ার মতো। ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি। ঘনবসতির এই দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কত তা নিয়ে বড় মাপের বিতর্ক থাকলেও মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজারের কাছাকাছি। জনসংখ্যার বিচারে বহির্দুনিয়ার তুলনায় এ সংখ্যা যে বেশ সীমিত তা অস্বীকার করার জো নেই। তবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এ মহামারী যে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে তা এক কথায় নজিরবিহীন। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপে অর্থনীতির মহাধস থামানো সম্ভব হলেও এখনো চাঙ্গা হয়নি ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানা। সরকারি-বেসরকারি খাতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরলেও কর্মীদের মধ্যে নেই স্থিরতা। ইতিমধ্যে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন, বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য। বড় বড় শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কোথাও কোথাও কমানো হয়েছে বেতন-ভাতা, আবার কোথাও কমানো হয়েছে কর্মী সংখ্যা। নিজেদের লোকসান ঠেকাতে আর প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে কোনো কোনো ব্যাংকও কর্মী ছাঁটাই করছে, বেতনও কমিয়েছে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে দেশের বেসরকারি খাতের অবস্থা খুবই নাজুক। নতুন কোনো কর্মী নিয়োগ তো হচ্ছেই না, বরং পুরনোদের ধরে রাখতে উদ্যোক্তারা হিমশিম খাচ্ছেন। সরকারি খাতে চলছে ব্যয় সংকোচন নীতির বাস্তবায়ন। সরকারি প্রতিষ্ঠানেও নতুন কর্মী নিয়োগ আগের মতো হচ্ছে না। স্তব্ধ হয়ে পড়েছে জনশক্তি রপ্তানি। গত ১০ মাসে ৩ লাখ কর্মীও বিদেশে যেতে পারেনি। অথচ আগের বছরের একই সময়ে অন্তত ১০ লাখ কর্মী দেশের বাইরে গিয়েছিলেন কাজের উদ্দেশে। সবচেয়ে দুঃসংবাদের খবর হলো, করোনাকালে অন্তত ১২ লাখ শ্রমিক বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন। যাদের মধ্যে মাত্র ২ লাখ তাদের আগের কর্মস্থলে ফিরে যেতে সক্ষম হয়েছেন। অন্যদের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা। করোনাকালীন দুর্যোগ মোকাবিলায় দুনিয়ার উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সাফল্য প্রশংসনীয় হলেও তাতেও এড়ানো যাচ্ছে না বিপর্যয়। যা রোধে অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে উদ্যোগী হতে হবে।  বন্ধ করতে হবে অপচয়ের সব পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর