সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অপ্রতিরোধ্য কিশোর গ্যাং

ওদের গডফাদারদেরও ধরুন

চট্টগ্রাম মহানগরীর মানুষ দুই শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। মানুষ শকুন হিসেবে নিন্দিত এসব নিকৃষ্ট জীবরা কেড়ে নিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ মানুষের স্বস্তি। কিশোর গ্যাংগুলোর লালন-পালনে ভূমিকা রাখছে রাজনৈতিক অঙ্গনের তথাকথিত বড় ভাইয়েরা। প্রভাব বিস্তার আর চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপরাধ সংঘটনে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের। চট্টগ্রাম মহানগরী পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করেছেন। তারা দুর্বৃত্ত দমনে নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন। পুলিশ সূত্রে স্বীকার করা হয়েছে ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয় পেয়ে কিশোর অপরাধীরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে মোবাইল চুরি, ছিনতাই, পকেটমারসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এমনকি তারা খুনের মতো অপরাধেও জড়িত। এরই মধ্যে ১৬ থানার ১৪৫ বিট কর্মকর্তাকে কিশোর গ্যাং ও তাদের কথিত বড় ভাইদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনুমিত হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীর ১৬ থানা এলাকায় দুই শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচশর বেশি সদস্য সক্রিয়। অপরাধে জড়িয়ে পড়া এসব কিশোরের মধ্যে দরিদ্র পরিবার থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তের সন্তানরাও রয়েছে। এমনকি বাদ যায়নি পথশিশুরাও। বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চলছে তাদের অপরাধযজ্ঞ। কিশোর গ্যাংগুলোকে পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে কথিত ‘বড় ভাইয়েরা’। অপরাধে জড়িয়ে পড়া কিশোররা কথিত রাজনৈতিক বড় ভাইয়ের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সারা দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য এসব মানুষ শকুন সত্যিকার অর্থেই চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।  এদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা জনমনে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, দেশের সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে রাখতে কিশোর গ্যাং দমনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গডফাদারদেরও আনা হবে আইনের আওতায়।

সর্বশেষ খবর