বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অস্তিত্ব সংকটে তালমা নদী

কর্তাব্যক্তিদের সুমতি ফিরুক

বাংলাদেশকে বলা হয় নদ-নদীর দেশ। সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে বাংলাদেশের সমান আয়তনের কোনো দেশে এত নদ-নদী-খাল-বিল নেই। বলা যায়, এ দেশের নদ-নদী, মিঠাপানির উৎস দেশের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। কিন্তু আমাদের অসচেতনতা নদ-নদীর অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পঞ্চগড় জেলা শহরের প্রাণ বলে পরিচিত তালমা নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে কিছু লোভী মানুষের কারণে। কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় জেলা শহরের উপকণ্ঠে প্রবহমান তালমায় শত শত ট্রলি দিয়ে বালু ফেলে নদীটি দখলের পাঁয়তারা করছে সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইকো ফ্রেন্ড লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এর আগে নদী দখল করে গড়ে উঠেছে হিমালয় বিনোদন পার্ক নামের একটি বিনোদন কেন্দ্র। একের পর এক দখলে নদীটি এখন প্রায় অর্ধমৃত। এভাবে চলতে থাকলে তালমা নামের নদীটি অচিরেই বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেবে। এতে পরিবেশ ও কৃষি অর্থনীতির ওপর বিরাট প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের তালিকা অনুসারে সৌদি বাংলা এনভায়রনমেন্ট প্রায় সাড়ে ৭ একর নদীর জমি দখল করেছে। বর্তমানে তারা নদীর প্রবহমান ধারায় বালু ফেলছে। অন্যদিকে হিমালয় বিনোদন পার্ক প্রায় সাড়ে ৮ একর জমি দখল করেছে। তালমার ওপর সংলগ্ন এলাকার চাষাবাদ নির্ভরশীল। নদীটি বিপন্ন হলে পঞ্চগড়ের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি। তালমার মতো বিপন্ন হয়ে পড়েছে দেশের শতাধিক নদ-নদী। খাল-বিল-লেকের হিসাব করলে তার সংখ্যা দাঁড়াবে হাজারের অঙ্কে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিছু লোভী মানুষ জলাশয়গুলোর অস্তিত্বের জন্য সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব দেখভাল করার জন্য জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যাদের পোষা হয় তাদের নীরবতায় ঘটছে একের পর এক অঘটন। এ বিষয়ে সরকারকে সচেতন হতে হবে।

সর্বশেষ খবর