বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সমুদ্রসম্পদ আহরণ

কাজে লাগাতে হবে সোনালি সম্ভাবনা

সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের চার দশকের বিরোধে ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক শালিসি আদালতের রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসে। দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্বের মনোভাব দেখিয়ে সে রায় মেনেও নিয়েছে। এ রায় বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত করেছে অপার সম্ভাবনা। ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে ভাগ্য গড়ার সম্ভাবনাকে গত আট বছর কতটুকু কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছে তা বড় মাপের প্রশ্ন। তবে ব্লু ইকোনমি থেকে লাভবান হওয়ার বিষয়টি এতটাই প্রযুক্তিনির্ভর যে এ ক্ষেত্রে যথাযথ প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ গত আট বছর সে প্রস্তুতিতেই সময় কাটিয়েছে। এ জন্য দক্ষ লোকবল সৃষ্টিতে গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে গড়ে তোলা হয়েছে উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এখন সময় ব্লু ইকোনমির ক্ষেত্রে জোর কদমে এগিয়ে যাওয়া। বিশ্ব অর্থনীতিতে সমুদ্রসংশ্লিষ্ট অবদান এক কথায় বিশাল। ৪৩০ কোটির বেশি মানুষের ১৫ শতাংশ প্রোটিনের জোগান দেয় সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু। পৃথিবীর ৩০ শতাংশ গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহ হয় সমুদ্রতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেল ক্ষেত্র থেকে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগ সমুদ্রনির্ভর। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া সমুদ্রসম্পদ থেকে বর্তমানে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। ২০২৫ সালে এ খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সে দেশের সরকার। এ ছাড়া চীন, জাপান, ফিলিপাইনসহ বেশ কিছু দেশ কয়েক শতাব্দী ধরে সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতির দিকে মনোনিবেশ করেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মকা- হচ্ছে সমুদ্রকে ঘিরে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্লুু ইকোনমির সম্ভাবনা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা খুবই সমৃদ্ধ। মাছের খনি বলা হয় এ সমুদ্রসীমাকে। সমুদ্রসীমায় গ্যাস ও তেলের সন্ধান পাওয়ার ব্যাপারে দেশের সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা বেশ আশাবাদী।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে। ব্লু ইকোনমির সোনালি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দক্ষ জনবল ও প্রযুক্তি আয়ত্তে আনাতে চালাতে হবে নিরন্তর প্রচেষ্টা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর