ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিকিকিনির ধারাটা আমাদের দেশে দ্রুতই জনপ্রিয় হচ্ছে। অনলাইনে বসে কয়েকটা মাত্র ক্লিকে চাহিদা জানানো যাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য চলে আসছে নিজের ঠিকানায়। বই, পোশাক, চাল-ডাল-সবজি, ইলেকট্রনিক্স পণ্য কিংবা কোনো সফটওয়্যার- সবই বেচাকেনা করা যায় অনলাইনে। আর এটাই ই-কমার্স। আর ই-কমার্সে তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহও বেশি। পণ্য বিক্রি করতে যেমন দোকান লাগে, ই-কমার্সেও তা-ই। একটি ই-কমার্স সাইট এখানে দোকান হিসেবে কাজ করে। তবে এ ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে দেশে চলছে ভয়ঙ্কর এক প্রতারণা। সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে শুরু হয় অবৈধ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা। মাত্র ১০ মাসের ব্যবধানে সেই সিন্ডিকেটটি এ ব্যবসা ছড়িয়ে দেয় বাংলাদেশসহ ৭০টি দেশে। রাতারাতি ৫ লাখ প্রবাসী ও বিদেশি গ্রাহকসহ ২২ লাখ গ্রাহক যুক্ত করে তারা, যাদের কাছ থেকে ইতিমধ্যে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ২৬৮ কোটি টাকা। এ টাকা বৈধ করার জন্য নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন জায়গায় কেনা হয়েছে জমি। ইতিমধ্যে এ চক্রের প্রধানসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রটি এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস ঠিকানার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে শত শত পোস্টের মাধ্যমে ই-কমার্সের কথা বলে উচ্চমাত্রার কমিশনের লোভ দেখিয়ে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। গ্রাহকদের দেখানো হতো রেফার কমিশন, জেনারেশন কমিশন, রয়্যাল কমিশনের প্রলোভন। ডিবি সূত্র বলছেন, ব্যবসার নামে অ্যাপ ও ওয়েবসাইটভিত্তিক প্রতারণা ঠেকাতে ডিবি, সিআইডি ও সিটির সাইবার ইউনিট সব সময় নজরদারি রাখছে। তবে অনলাইনে কেনাকাটায় প্রতারণার শিকার হলে ৩০ দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করতে হবে। ই-কমার্স প্রতারণা রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।