রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ভারত ছাড় আন্দোলন

ভারত ছাড় আন্দোলন, ১৯৪২ ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ইংরেজবিরোধী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ প্রথম স্বতঃস্ফূর্ত ব্যাপক আন্দোলন (Quit India Movement, 1942)। ক্রিপস মিশনের অস্পষ্ট প্রস্তাবাবলি যেমন যুদ্ধপরবর্তীকালে ভারতের জন্য ডমিনিয়ন মর্যাদা প্রদান, প্রাদেশিক আইনসভা ও দেশীয় রাজ্যগুলোর দ্বারা সংবিধান প্রণয়ন কমিটি নির্বাচন, প্রদেশগুলোর এতে যোগদান করা না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধারা, যুদ্ধে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের আশু অংশগ্রহণ কিন্তু ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা রাখা প্রভৃতি কাউকেই সন্তুষ্ট করতে পারেনি। বরং এ পরিপ্রেক্ষিতে বলকান উপদ্বীপের মতো ভারতের ভাগ্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দেয়। মালয়, বার্মা ও সিঙ্গাপুর থেকে ব্রিটিশদের কলঙ্কজনক পলায়নের ফলে তাদের অধীন ভারতীয়দের নিজেদেরই আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে হয়। এসব ভারতীয়ের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অবর্ণনীয় দুর্দশাপূর্ণ অবস্থা, ভারতের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত শ্বেতাঙ্গ সৈন্যদের দ্বারা ভারতীয়দের ওপর জাতিগত বিদ্বেষমূলক আচরণ, সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থাকে যুদ্ধের কাজে লাগানোর কারণে সম্ভাব্য জাপানি আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের বাংলায় অনুসৃত ‘পোড়ামাটি নীতি’, যুদ্ধকালীন জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, কালোবাজারি এবং মুনাফাখোরদের দৌরাত্ম্যে সব কিছুই শ্বেতাঙ্গবিরোধী উত্তেজনা সৃষ্টি করতে বিশেষ অবদান রাখে। সর্বোপরি, যুদ্ধের শুরু থেকেই ১৯৩২ সালের আদলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রের ব্যাপক কঠোর নীতি গ্রহণ করার প্রয়াস ছিল। ৯ আগস্ট ভোরে কংগ্রেস নেতাদের গ্রেফতার দেশব্যাপী এক নজিরবিহীন গণরোষের সৃষ্টি করে, যা বাংলার শহরগুলোয় বিশেষ করে বড় শহরগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে।

ভারত ছাড় আন্দোলনের প্রধান তিনটি পর্ব দেখা যায়। প্রথম পর্বে এ আন্দোলন প্রধানত শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল। এ পর্যায়ে প্রধান শহরগুলোয় হরতাল, ধর্মঘট, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ ছিল লক্ষণীয়। এ পর্বের আন্দোলন ছিল খুবই ব্যাপক ও সহিংস। কিন্তু দ্রুততার সঙ্গেই এ আন্দোলন দমন করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর