রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তৃতীয় লিঙ্গের জন্য মাদ্রাসা

শিক্ষা কর্মসংস্থানের পথ দেখাবে

বাংলাদেশে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য একটি আলাদা মাদ্রাসা চালু হয়েছে। এটি হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য প্রথম মাদ্রাসা। ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের লোহার ব্রিজ এলাকায় নির্মিত এ মাদ্রাসাটির নাম ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’। সরকারি হিসাবে দেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার হলেও এর পরিমাণ ৫০ হাজারের বেশি। আয়োজকরা বলছেন, হিজড়ারা পরিবার ও সমাজে নানাভাবে অবহেলিত, অনাকাক্সিক্ষত এবং অবাঞ্ছিত। তাই এ জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর লক্ষ্যে এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও তাদের পড়ানোর ব্যবস্থা নেই। মাদ্রাসাটিতে শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ নিতে পারবে। এর অর্থায়ন করছে মরহুম আহমেদ ফেরদৌস বারী ফাউন্ডেশন। এর অধ্যক্ষ ও পরিচালক মুফতি আবদুর রহমান আজাদ নিজেও অন্যতম উদ্যোক্তা। অনাবাসিক এ মাদ্রাসায় যে কোনো বয়সী তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ভর্তি হতে পারবে। শুক্রবার মাদ্রাসার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কামরাঙ্গীর চর, লালবাগ, কেরানীগঞ্জ ও বাড্ডার ৪০ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ অংশ নেয়। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ পরিচয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। পরের বছর ভোটার নিবন্ধন বিধিমালা প্রণয়নের সময়ই নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন ফরমে লিঙ্গ পরিচয় হিসেবে হিজড়া যুক্ত করে। তারা বিভিন্ন নির্বাচনেও অংশ নিয়েছে। জানা গেছে, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশন দেশে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছে। উত্তরণ ফাউন্ডেশন হিজড়া ও বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য ঘর নির্মাণ, একটি ফ্যাক্টরি ও টেইলার্স করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। আসলে হিজড়ারা আমাদের মতোই রক্ত-মাংসের মানুষ। তবু তারা মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত। জীবন ধারণের সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকায় বেঁচে থাকার তাগিদে তারা অবাঞ্ছিত কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে ও অনেকের বিরাগভাজন হচ্ছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ হলে নিশ্চয়ই তারা আলোর পথ দেখবে।

সর্বশেষ খবর