একদিকে শ্রমবাজারে বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তির আগমন, অন্যদিকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শ্রমিকের চাহিদা কমে যাচ্ছে। সরকার শিল্প খাতে কর্ম সৃজনের গতি বাড়াতে ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ আধুনিকায়ন, শ্রমিকের সুরক্ষা জোরদার করা এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকহারে কর্মে প্রবেশ উপযোগী আইন-বিধি, নীতি-কৌশল সংস্কারের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে। করোনা মহামারীর মধ্যে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের নাজুক পরিস্থিতির কারণে কর্মসংস্থান সীমিত হয়ে গেছে। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষিত তরুণরা চাকরির বিকল্প ব্যবসা বা অন্য পেশায় মনোযোগ দিচ্ছেন। অনেকেই চাকরি ছেড়ে কৃষিতে ঝুঁকছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কেউ করছেন গবাদিপশুর খামার। বুয়েট থেকে পাস করে পালন করছেন হাঁস-মুরগি বা চাষ করছেন মাছের। নার্সারি, ফলের বাগান বা সমন্বিত খামার করে লাখ টাকা আয় করছেন অনেকে। কেউ আবার কৃষকদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষিত করে সার ও বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে আত্মনিয়োগ করেছেন। মধ্যস্বত্বভোগী কমিয়ে নিজস্ব বিপণন ব্যবস্থার মাধ্যমে সেসব বিষমুক্ত সবজি, শস্য ও মাছ-মাংস পৌঁছে দিচ্ছেন সারা দেশে। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও সংশ্লিষ্টদের মতে কৃষিতে আত্মনিয়োগ করে স্বাবলম্বী হওয়া শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর সংখ্যা এখন দুই-তিন লাখের কম নয়। করোনার প্রভাবে যখন চারদিকে কর্মহীনের ছড়াছড়ি, তখনো বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে কৃষি খাত। এমনকি কাজ হারিয়ে গত কয়েক মাসে অসংখ্য মানুষ গ্রামে ফিরে কৃষি ও খামার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। কেউ আবার চাকরি বা ব্যবসার পাশাপাশিও বাড়তি আয়ের জন্য গড়ে তুলছেন খামার। অনেকে কৃষক থেকে ফসল সংগ্রহ করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তা বিক্রির ব্যবস্থা করছেন সারা দেশে। সুতরাং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কৃষি ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। তরুণদের আর্থিকসহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে দ্রুতই তাদের স্বাবলম্বী করা সম্ভব।