মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

হায় আনোয়ারুল আলম শহীদ

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

হায় আনোয়ারুল আলম শহীদ

অনেক দিন থেকে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সঞ্চালনায় চ্যানেল আইয়ে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ অনুষ্ঠান চলছে। বামপন্থিদের বোঝা মুশকিল। তাদের রংবেরঙের শেষ নেই। তারা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। নির্মমভাবে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর এই নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু জিয়াউর রহমানের দারুণ ভক্ত-অনুরক্ত হয়েছিলেন। যা পেরেছেন জিয়ার পক্ষে করেছেন। এখন আজীবনের আওয়ামী লীগারের চাইতে বড় আওয়ামী লীগার সেজেছেন। করটিয়া কলেজের ছাত্র কবি-সাহিত্যিক সেলিম আল দীনের লাশের সামনে শহীদ মিনারে তার বক্তৃতা শুনেছিলাম। নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু তার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে সেলিম আল দীনের বিদেশে চিকিৎসার জন্য নাকি ৬০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। সেও ১০-১২ বছর আগের কথা। তখনকার ৬০ লাখ এখন ৩-৪ কোটির সমান। সেই নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু তার অনুষ্ঠানে কখন কোথা থেকে কাকে আনেন তা তিনিই জানেন। এ নিয়ে আমার মাথাব্যথার কোনো কারণ ছিল না। কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার উপস্থাপনায় অনেক মুক্তিযোদ্ধা গাছে উঠে হানাদারদের আক্রমণ করে। শিশুর জন্য যেমন মায়ের কোল, সব যোদ্ধার জন্য মাটি তেমন। মাটি ছেড়ে যুদ্ধ করা যায় না, পাখির মতো বন্দুকের শিকার হতে হয়। ওসব বলায় আর কিছু না হোক মুক্তিযুদ্ধের মহিমা খাটো হয় খেলো হয়, হানাদারদের নৃশংসতা নিষ্ঠুরতা ঢাকা পড়ে। অল্প বয়স বড় মহিমাময়। অল্প বয়স যেমন ভালোবাসতে জানে, তেমনি ত্যাগ-তিতিক্ষা-সততায় জীবন বিলিয়ে দিতে আত্মবলিদানে পিছপা হয় না। কাদেরিয়া বাহিনীতে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ছিল ১৮ হাজার। সেদিন জনতা ব্যাংকের এক ইতিহাসে দেখলাম, ৩০ হাজার সশস্ত্র ও ৭২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হয়েছিল। ১৮ হাজারের জায়গায় ৩০ হাজার বললে অনেকেই হয়তো খুশি হতে পারে, বিবেকবান সত্য অনুগামীরা খুশি হবে না। ১৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধার এখনো ১০ হাজার তালিকাভুক্ত হয়নি। তার পরও বাংলাদেশ! সেদিন এক অভাবনীয় ঘটনার কথা শুনেছি। বাসাইলের কামুটিয়া যুদ্ধে বাথুলী বাজারে মর্টার শেলের গোলায় আহত হয়েছিল দুজন। একজন হাবিবুর রহমান বীরপ্রতীক, অন্যজন আনছারুল আলম। একই জায়গায় একই গোলার আঘাতে আহত হয়ে হাবিবুর রহমান বীরপ্রতীক হয়েছেন, অন্যজনের আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম নেই। সেদিন তাকে জামুকাতে ডাকা হয়েছিল। আমার লিখিত নিয়ে গিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাটি ফিরে এসে বলেছে তাকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, দু-একটি কটুকথাও বলা হয়েছে। জামুকাতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ওয়াকার বীরপ্রতীকের কাছে লোকজন যায়। শুনেছি ভালো আচরণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের পিয়নরা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন সম্মান করে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দুবার গিয়েছি। সেখানেও কোনো সম্মান নেই। ঠিক এমন সময় অধ্যাপক নাজির আহমেদ চৌধুরী রঞ্জুর একটা লেখা পড়লাম। নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ অনুষ্ঠানে কাদেরিয়া বাহিনীর বেসামরিক প্রধান আনোয়ারুল আলম শহীদকে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার কথাবার্তায় কাদেরিয়া বাহিনীর অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি, তিনিই সব। এসবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন অধ্যাপক নাজির আহমেদ রঞ্জু। মুক্তিযুদ্ধের সময় রঞ্জু হাইস্কুলের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিল। চিকিৎসাবিদ্যায় লেখাপড়া করে অধ্যাপক হয়ে বছরখানেক হলো অবসরে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে বেশির ভাগই ছিল আনপর মুক্তিযোদ্ধা। যারা পরে লেখাপড়া করে বড় হয়েছে তারা মোটামুটি সম্মানের সঙ্গে জীবন পার করেছে বা করছে। সখীপুর-ভূঞাপুরের অসংখ্য লেখাপড়া জানা মুক্তিযোদ্ধা ছিল। তারা বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর বিরাট কিছু হতে না পারলেও মোটামুটি মাঝারি ধরনের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে অবসরে গেছে। ভূঞাপুরের আলীম, জিয়া, আজিজ বাঙ্গাল, ভোলা, মোহন, আশরাফ গিরানী, মাহফুজ সিদ্দিকী, ক্যাপ্টেন মোতাহার ঠিক তেমনি সখীপুরের অনেকেই ছিল। নাজির আহমেদ রঞ্জু তাদের মধ্যে অন্যতম। আনোয়ারুল আলম শহীদের সাক্ষাৎকার তাকে মারাত্মক আহত করেছে তাই সে প্রতিবাদ করেছে। সেজন্য মুক্তিযুদ্ধে তার অংশগ্রহণের কিছু কথা তুলে না ধরলেই নয়। জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত আনোয়ারুল আলম শহীদ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। দলবল নিয়ে আমি ভূঞাপুরে গেলে পারদিঘুলিয়ার ছাত্রলীগ নেতা মতি, যে পরে ঠিকাদারি করত, স্মৃতি ও সিরাজুল আলমকে ছাত্রলীগে এনেছিল আর আবুল কালাম আজাদ বীরবিক্রম আনোয়ারুল আলম শহীদকে ধরে এনেছিল। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার পরও তিনি কেন পালিয়ে আছেন তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চাইলে তাকে নিয়ে নেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার দুই-আড়াই মাস পর গ্রামগঞ্জের শিক্ষিত-অশিক্ষিত কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তাকে মানিয়ে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই তাকে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষিত মানুষ তালিকায় ভুলত্রুটি ধরলে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা ভীষণ খেপে যায়। পরে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাদের শান্ত করা হয়। যোগ্যতা থাকলে সুযোগ পেলে অনেকেই নিজের জায়গা করে নিতে পারে। আনোয়ারুল আলম শহীদও তা করে নিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ছয়-সাত মাস কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে তার কাজে খুব একটা ত্রুটি দেখিনি। মোটামুটি সফলভাবে যোগ্যতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে তার ক্ষমতা ছিল অপরিসীম। যথার্থই দক্ষতা ও যোগ্যতার সঙ্গে তিনি তার ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। বাহিনীর সবাই তাকে মেনেও নিয়েছিল। নভেম্বরে ভারত থেকে তার নেতা লতিফ সিদ্দিকী ফিরে এলে বেসামরিক প্রশাসনে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। কারণ নেতৃবৃন্দের সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করার এক আবেদন ৫০০ এবং এক দিনে ৫ হাজার টাকার বেশি বরাদ্দের ক্ষমতা ছিল না। অথচ আনোয়ারুল আলম শহীদের ক্ষমতা ছিল এক আবেদনে ৫ হাজার এবং এক দিনে সর্বোচ্চ ১ লাখ। এজন্য কাউকে জিজ্ঞেস করতে হতো না, এমনকি আমাকেও না। শুধু যুদ্ধে হাত ঘোরানো ছাড়া আর সব ক্ষমতা ছিল। যুদ্ধ ক্ষেত্রেও বেসামরিক প্রশাসনের যথেষ্ট কর্তৃত্ব নেতৃত্ব ও ক্ষমতা ছিল। ছোটখাটো দলকে কোথাও যাওয়া-আসা, কাউকে গ্রেফতার করা এসব তার কথাতেই হতো। সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো দিন তাকে কোনো বিষয়ে জবাবদিহি করতে হয়নি। ছোটখাটো কোনো বিষয়ে উপদেশের মধ্যেই শেষ হয়েছে। তাই কেন যে তিনি এত দিন পর এমন করছেন, বই লিখে নিজে কিংবদন্তি সাজছেন বুঝতে পারছি না।

আগে আমাদের অনেক নেতাই ছিলেন বাবা মুসলিম লীগ, ছেলে ছাত্রলীগ। তেমনি আনোয়ারুল আলম শহীদ এবং আহমদ মোক্তারের ছেলে আলীমুজ্জামান রাজু শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। তবে আনোয়ারুল আলম শহীদের বাবা রহিম মওলানা এবং আলীমুজ্জামান রাজুর বাবা আহমদ মোক্তার দুজনই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আনোয়ারুল আলম শহীদের বাবা শান্তি কমিটির জেলা সদস্য হয়ে খুব বিপদে পড়েছিলেন। তিনি শান্তি কমিটি আর তার ছেলে কাদেরিয়া বাহিনী! কী করে যে তার জীবন বেঁচেছে তা আল্লাহ রব্বুল আলামিনই জানেন। মুক্তিবাহিনী থেকে ফিরিয়ে আনতে তার মেয়েজামাই বিখ্যাত কবি রফিক আজাদকে পাঠিয়েছিলেন। কবি রফিক আজাদ মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি গহিন অরণ্যে গিয়ে তাকে ফিরিয়ে আনার চিন্তা না করে তিনিও বরং মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গিয়েছিলেন। সবকিছুরই ভালোমন্দ থাকে। আনোয়ারুল আলম শহীদের মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন উজ্জল, পরবর্তী সময়গুলো তেমন নয়। কেউ একবার মিথ্যা বললে তার আর অসত্য বলতে কোনো কষ্ট হয় না। ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭২ কাদেরিয়া বাহিনীর হাত থেকে বঙ্গবন্ধু অস্ত্র নিতে এলে টাঙ্গাইল ওয়াপদা ডাকবাংলোয় বাথরুমে ঢুকে রক্ষীবাহিনী গঠনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার আলোচনা- এটা বড় বেশি সত্যের অপলাপ। বঙ্গবন্ধু যখন টাঙ্গাইলে আসেন হানাদাররা আমাদের বাড়িঘর পুড়ে ছারখার করে দেওয়ায় আমি তখন ওয়াপদা ডাকবাংলোয় থাকতাম। যে ছোট্ট ঘরে থাকতাম তাতেই বঙ্গবন্ধু উঠেছিলেন। বাথরুম তেমন বড়সড় ছিল না। বঙ্গবন্ধুর একারই জায়গা হওয়ার কথা নয়, তারপর আবার আনোয়ারুল আলম শহীদ! এখানে বঙ্গবন্ধুকে বড় বেশি ছোট করা হয়েছে। শহীদ রক্ষীবাহিনীতে তার ইচ্ছায় যাননি। আর যেতেও পারেননি। ইচ্ছা ছিল আমার আর বঙ্গবন্ধুর। যাই হোক, ওসব কথার কোনো প্রয়োজন নেই। মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেও যেমন জিয়াউর রহমানকে তার দলের লোকজন প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষক বলে চালাতে চায়। এখন কাদেরিয়া বাহিনীতে যদি আনোয়ারুল আলম শহীদ প্রধান হন তাহলে তো কাদেরিয়া বাহিনী না হয়ে শহীদ বাহিনী হওয়ার কথা। ১১ জানুয়ারি রাত ১০টায় বঙ্গবন্ধু আনোয়ারুল আলম শহীদকে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর খোঁজে পাঠিয়েছিলেন- এও এক বাজে কথা। কারণ তখন কাদেরিয়া বাহিনী এতটা সুশৃঙ্খল ছিল যে অনুমতি না নিয়ে কারও প্রস্রাব করতে যাওয়ারও পথ ছিল না। সকালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা বলে আমরা টাঙ্গাইল ফিরেছিলাম। অযথা ওসব বলে শেষ বয়সে নিজেকে শুধু নষ্ট আর নষ্টই করছেন। কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধা মতি, স্মৃতি আনোয়ারুল আলম শহীদের সাক্ষাৎকারে এত বিরক্ত হয়েছে যেটা লিখে বোঝানো মুশকিল। কী বলব আনোয়ারুল আলম শহীদকে নিয়ে। স্বাধীনতার পর তার কথা বলতে গেলে মহাভারত হবে, হবে বাল্মীকির রামায়ণ। ভদ্রলোক রক্ষীবাহিনীর অন্যতম পরিচালক হয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যার প্রতিবাদ প্রতিরোধে কিছু করেননি। বরং সবার আগে রেডিওতে গিয়ে খুনি মোশতাকের প্রতি রক্ষীবাহিনীর অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। রক্ষীবাহিনীর মহাপরিচালক কর্নেল নূরুজ্জামান তখন বিদেশে। তিন পরিচালকের মধ্যে আনোয়ারুল আলম শহীদই ছিলেন সিনিয়র। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদ তাদের পরিচালনা করেননি, আদেশ দেননি সেজন্য রক্ষীবাহিনী কিছু করেনি বা করতে পারেনি- এসব বোগাস কথা। ’৭৫-এর ব্যর্থতার কারণে যেখানে তার শাস্তি হওয়ার কথা সেখানে তিনি পুরস্কৃত হয়েছেন। মোশতাক, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সরকারে আনন্দে কাজ করে অবসরে গিয়ে আবার নতুন আওয়ামী লীগার হয়েছেন। আসলে এখন আওয়ামী লীগে আর তেমন জাতপাত নেই। তাই যখন যাকে খুশি তাকে নিয়ে দলের সর্বনাশ করা হচ্ছে। ব্যর্থ শফিউল্লাহ আওয়ামী লীগে জায়গা পেয়েছেন, জাতির পিতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিরাপত্তা-প্রধান কর্নেল বা ব্রিগেডিয়ার জামিল চরম ব্যর্থ হয়ে একা একা এতিমের মতো গুলি খেয়ে মরে জাতির সর্বনাশ করেছেন। তিনিও আজ মুজিব পরিবারে হিরো। এসব বলে কী হবে? কারও যদি চেতনা লুপ্ত হয় কেউ যদি জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো মুশকিল। তাই আনোয়ারুল আলম শহীদের চেতনাও যখন লুপ্ত হয়েছে তখন তাকে নিয়ে বলে কোনো লাভ নেই।

যাক, অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নির্বাচনে ট্রাম্প হেরেছেন। হেরেও ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে চিৎকার করছেন। বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্র তো এক নয়। সেখানে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে খুব একটা লাভ হবে না। ফল যা হওয়ার হয়ে গেছে। জো বাইডেন বিজয়ী হয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানাই। রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির তেমন পরিবর্তন হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি সকালের কচুপাতার পানি নয়। তবে চরম রূঢ়ভাষী খামখেয়ালি ট্রাম্পের হাত থেকে পৃথিবী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। ট্রাম্পকে খেপাটে বলা হতো। হিন্দু অবতার খেপা ব্যামা মা তারার এক চরম ভক্ত। খেপা ব্যামা তারা পিঠ আগলে ছিলেন। তিনি শিশুকাল থেকে আমৃত্যু মানুষের কল্যাণ করেছেন, আর্তের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। সে রকম  খেপা ট্রাম্প হলে কোনো কথা ছিল না। ট্রাম্পের কথাবার্তা ছিল চরম বিধ্বংসী আণবিক বোমার চেয়েও জঘন্য। বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় এটা অবশ্যই আশা করব, সারা পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস বইবে। তার কিছু কথাবার্তা মানুষকে সত্যিই স্বস্তি দিয়েছে, ‘ফলাফল ঘোষণার আগে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা নয়’ এ প্রশংসনীয় সহনশীলতার ইঙ্গিত। তিনি এও বলেছেন, ‘আমার কাছে লাল-নীল নয়, আমরা সবাই আমেরিকান।’ এই তো সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়কের কথা। দেখা যাক, ভবিষ্যতে কী হয়। আশা করি, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ নিরসনে তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবেন। বাইডেন এবং আমেরিকার জনগণের সাফল্য কামনা করছি।

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর