মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মহাবীর

মহাবীর

জৈনধর্ম ও দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা মহাবীর আনুমানিক ৫৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনার নিকটে ক্ষত্রিয়কু-ু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সিদ্ধার্থ, মাতার নাম ত্রিশালা বা প্রিয়কারিণী এবং স্ত্রীর নাম যশোধা। জৈনধর্মের বিশ্বাস অনুসারে তিনি ছিলেন এ ধর্মের ২৪তম এবং সর্বশেষ ‘তীর্থঙ্কর’ বা ধর্মগুরু। মহাবীরের পিতৃদত্ত নাম বর্ধমান। এ ছাড়া তাঁকে বীর, বীরপ্রভু, সান্মতি, অতিবীর, জ্ঞাতপুত্র, বৈশালিয় ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হয়। তবে তিনি মহাবীর নামেই সমধিক পরিচিত। জনশ্রুতি অনুসারে মহাবীরের জন্মলাভের পর তাঁর পরিবার বিপুল ধনসম্পদের অধিকারী হয়। জনগণের বিশ্বাস, জন্মের পর দেবতা ইন্দ্র তাঁকে স্বর্গীয় দুধ দ্বারা স্নান করিয়ে পবিত্র করেন। রাজার পুত্র হিসেবে তিনি রাজকীয় জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তাঁর ৩০ বছর বয়সে পিতা-মাতার মৃত্যু হলে ভাই নন্দীর অনুমতি নিয়ে তিনি সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেন। সুদীর্ঘ ১২ বছর গঙ্গা অববাহিকায় একাগ্রচিত্তে ও একনিষ্ঠভাবে তপস্যা করে তিনি ‘কৈবল্য’ তথা চরমজ্ঞান লাভ করে ‘মহাবীর’ নামে খ্যাত হন। সিদ্ধিলাভের পর তিনি ‘জিন’ বা ‘রিপু-জয়’ নামেও পরিচিতি লাভ করেন। তিনি প্রায় ৩০ বছর ধর্ম প্রচার করে ৭২ বছর বয়সে দক্ষিণ বিহারের পবা নামক স্থানে ৫২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মারা যান। তিনি প্রায় ৪ লাখ অনুসারী রেখে যান। মহাবীর প্রচারিত ধর্ম ‘নির্গ্রন্থ’ বা ‘জৈন’ ধর্ম নামে পরিচিত। ভারতের সর্বত্র তাঁর মৃত্যু দিবসকে ‘দীপালি উৎসব’ হিসেবে পালন করা হয়। মহাবীরের ধর্মদর্শন নিরীশ্বরবাদী এবং এ ধর্মদর্শনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণ করে পার্থিব জীবনের উন্নতি সাধন। নৈতিক জীবনাচরণ ও সার্বিক জীবনধারণ অনুসরণ করে আধ্যাত্মিক মুক্তিলাভ তথা কৈবল্যলাভই তাঁর দর্শনের মূলভিত্তি। মহাবীরের দর্শনের দুটি প্রধান দিক হলো অধিবিদ্যা ও নীতিবিদ্যা। তাঁর নীতিবিদ্যার পাঁচটি প্রধান দিক হলো- সত্য, অহিংসা, ব্রহ্মচর্য, অস্তেয় ও অপরিগ্রহ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর