মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্ধ সরকারি পাটকল

পিপিপি বা লিজের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক

বন্ধ করে দেওয়া সরকারি পাটকলগুলো পিপিপি বা লিজের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক উল্লেখ করেছেন, লোকসান থেকে মুক্তি পেতেই সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ করা হয়েছে। বিজেএমসির পাটকলগুলো শুধু লোকসান নয়, ভর্তুকি মূল্যে পাট রপ্তানি করায় বেসরকারি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। লোকসানি মূল্যে বিজেএমসি ভারতে পাট রপ্তানি করায় ভারত এন্ট্রি ডাম্পিং ডিউটি করে। এর ফলে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পাটের প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। অথচ পাট রপ্তানিতে প্রাইভেট সেক্টরের শেয়ার ছিল ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ। ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার পাট যেত সেখানে। এসব চিন্তা করেই সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ করা হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে, যেগুলো বাকি আছে সেগুলোও পরিশোধ করা হচ্ছে। বন্ধ করে দেওয়া পাটকলগুলো সম্পর্কে মন্ত্রীর বক্তব্য বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার। ওই পাটকলগুলো পিপিপি বা লিজের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত একটি সঠিক ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ। আমরা প্রথম থেকেই সরকারি খাতের নামে সাদা হাতি পোষার সঙ্গে দ্বিমত করে আসছি। সরকারি পাটকলগুলো চালু রাখার বদলে শ্রমিক-কর্মচারীদের বসিয়ে রেখে বেতন দিলেও তাতে লোকসান কম হতো। জনগণের ট্যাক্সের টাকার এমন অপচয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু পাটকল নয়, অন্যান্য সরকারি খাতের জন্যও এটি একটি সাধারণ সত্যি। পাটকল বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে যারা কুম্ভীরাশ্রু প্রদর্শন করছেন, তারা যে বিষয়টি গোপন রাখছেন তা হলো বন্ধ পাটকলের শ্রমিকদের যে অর্থ দেওয়া হয়েছে তা সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগ করলে প্রাপ্ত মজুরি থেকেও বেশি অর্থ আসবে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে আমরাও চাই বন্ধ পাটকলগুলো যাতে কোনোভাবে লুটপাটের শিকার না হয়। পিপিপি বা লিজের ভিত্তিতে বেসরকারি খাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সেদিক থেকে অভিনন্দনযোগ্য। তবে এ ক্ষেত্রেও সরকার তথা পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়কে সবকিছু সঠিকভাবে এগোচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে চোখ ও কান খোলা রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর