রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শিক্ষার সংকট

বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে

করোনার বিস্তার রোধে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত এবং প্রায় সব শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে বেশির ভাগ দেশে। কার্যত পৃথিবীর শিক্ষাব্যবস্থাই এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিবিষয়ক নানা পরিকল্পনার কথা আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারছি। কিন্তু করোনার এ সময়ে শিক্ষা নিয়ে তেমন কোনো পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে না। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, জীবন বাঁচানোর কার্যক্রম যেখানে পর্যাপ্ত নয়, সেখানে শিক্ষা নিয়ে কথা বলা কতটা স্বাভাবিক? অথচ সরকারি অফিস-আদালত, গণপরিবহন সবকিছু স্বাভাবিক চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি আটকে আছে বিভিন্ন পরীক্ষাও। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কবে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি-জেডিসি, এইচএসসিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা বাতিল করেছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাগিদ দিলেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে জানিয়েছে তারা এ প্রক্রিয়ায় যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির এক সভায় আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঁচটির পরিবর্তে তিনটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাঝে অপরিকল্পিতভাবে অনলাইন ক্লাসের নামে সরকারি অর্থ অপচয় করা হয়েছে। সেশনজটের কথা হয়তো ভুলে গেছেন কর্তাদের কেউ কেউ। বহু শিক্ষার্থী চাকরির বয়সসীমা হারাচ্ছে। ফি বছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না করে চালু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর করা, সত্যিকার মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ, পড়াশোনা ও গবেষণার গুণগত মান উন্নয়ন, শিক্ষক রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভাবতে হবে। উন্নয়ন মানে শুধুই রাস্তাঘাট, সেতু, অবকাঠামো বা দালানকোঠা নয়, আসল উন্নয়ন হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য।  এ বিষয়ে আমাদের বিশেষ ঘাটতি রয়েছে। দেশের শিক্ষার জন্য বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর