রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসা নৈরাজ্য

অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক বন্ধ হোক

চিকিৎসা একটি মানবাধিকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এ অধিকার সুনিশ্চিত করাকে তাদের কর্তব্য বলে মনে করেছেন। স্বাধীনতার পর এ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে পাহাড় প্রমাণ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও। এ অগ্রাধিকারের কারণেই প্রায় পাঁচ দশক আগে স্বাধীনতার সময় যে দেশের ৯৫ ভাগ ওষুধ আসত বিদেশ থেকে, সে দেশ এখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ওষুধ রপ্তানিতে এগিয়ে। এক সময় যে দেশে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারকেও বিশাল কিছু ভাবা হতো সে দেশে এখন মফস্বল শহরগুলোতেও হৃদযন্ত্রের অপারেশন হচ্ছে সফলভাবে। কিডনি পুনঃস্থাপনসহ জটিল অস্ত্রোপচারও হচ্ছে এদেশে। এ সাফল্যের পাশাপাশি চিকিৎসা খাতে নৈরাজ্যও চলছে অবাধভাবে। মানসম্মত ওষুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ নাম কিনলেও মানহীন ও নকল ওষুধের মহোৎসবও চলে এ দেশে। চিকিৎসাকে মানুষ ঠকানোর ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়ে দেশজুড়ে গড়ে উঠেছে ১২ হাজার অনুমোদনহীন ক্লিনিক হাসপাতাল। ১৯৮২ সালের মেডিকেল অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালানোর সুযোগ নেই। ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসা জালিয়াতি উদঘাটিত হওয়ার পর জানা যায়, অনুমোদন ছাড়াই ওই হাসপাতাল চলছিল। গত সোমবার ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে বরিশাল মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর উদঘাটিত হয় ওই হাসপাতালটিও ছিল অনুমোদনহীন। ১০ নভেম্বর সারা দেশে অনুমোদিত এবং অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বিভাগীয় পরিচালকদের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ পরিপ্রেক্ষিতে যে তালিকা তৈরি হয়েছে তাতে উঠে এসেছে অনুমোদনহীন ১২ হাজার ক্লিনিক হাসপাতালের নাম। মানুষ বাঁচানোর বদলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার এমন ব্যবসা সভ্য দুনিয়ায় অসম্ভব হলেও তা অবাধে চলছে সব সম্ভবের এই দেশে। লোকবলের অভাব দেখিয়ে এগুলো টিকিয়ে রাখছে স্বাস্থ্য দফতরের কিছু পরজীবী। এ নৈরাজ্যের অবসানে  সরকার কঠোর হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর