সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দারিদ্র্য মোকাবিলা

এ চ্যালেঞ্জ জিততেই হবে

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে গত এক দশকে। কিন্তু সে ধারা হোঁচট খেয়েছে করোনাকালে। দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার বদলে এই ভয়াল দৈত্যের থাবায় আবদ্ধ হচ্ছে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ। স্বীকার করতেই হবে দারিদ্র্য বিমোচনকে সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। এ জন্য তারা যে ঠিকপথে চলার চেষ্টা করছে তাতে সন্দেহের অবকাশ কম। কিন্তু করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯ নামের ভয়াল আপদ দারিদ্র্য মোচনের প্রয়াসকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। একাধিক গবেষণা সংস্থার জরিপ বলছে, গত সাত মাসে বেশির ভাগ মানুষেরই আয় কমেছে কভিডের কারণে। দারিদ্র্যসীমার নিচে অসহায়ভাবে নেমে যাচ্ছে নিম্নবিত্তরা। সমাজের ধনী অংশের আয় কমেছে যৎসামান্যই। ফলে দ্রুত বাড়ছে ধনী-গরিবের বৈষম্য। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ব্র্র্যাক ও পিপিআরসির জরিপ অনুযায়ী জুলাই শেষে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ২০ শতাংশ। ২০১৬ সালে এটি ছিল ২৪ শতাংশ। সেখানে চার বছরে দারিদ্র্য কমেছিল ৪ শতাংশ। গত ডিসেম্বর-জুলাই সাত মাসে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়েছে কভিডের ভয়াল থাবায়। এ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দারিদ্র্যের হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, দারিদ্র্যের হার এখন ৩৫ শতাংশ, যা ডিসেম্বর ২০১৯-এ ছিল ২০ শতাংশ। দারিদ্র্যের হার আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি নিম্ন-মধ্যআয়ের দেশের তালিকায় টিকে থাকার সংকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ বিপদ ঠেকাতে না পারলে সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা থেকেই যাবে। তাত্ত্বিক বিচারে কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বপরিসরে এ প্লাসের সমতুল্য। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারেও ধারেকাছের সব দেশের চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু এতে আত্মপ্রসাদের সুযোগ নেই। কভিড-১৯ যে বৈশ্বিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে তা থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশের মতো দেশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে সংকট মোকাবিলার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।  দারিদ্র্য ঠেকানোর চ্যালেঞ্জে হারার কোনো অবকাশ নেই।  এ চ্যালেঞ্জে জিততে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর