মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রেলওয়ে কেনাকাটায় দুর্নীতি

আত্মসাৎকৃত অর্থ আদায় করুন

রেলওয়ে ও দুর্নীতি সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাধীনতার পর থেকে। একসময় রেলওয়ে ছিল লাভজনক প্রতিষ্ঠান। সেবার মানও ছিল ভালো। কিন্তু এর অভ্যন্তরে আরব্য উপন্যাসের ‘থিপ অব বাগদাদ’-জাতীয় জীবেরা ঠাঁই পাওয়ার পর থেকে সেবার বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। দফায় দফায় যাত্রী ভাড়া বাড়িয়েও রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ে কেন লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে- তার চালচিত্র ফুটে উঠেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ‘কেনাকাটার নামে কী হয় রেলে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, করোনা সুরক্ষাসামগ্রী কেনাকাটায় রীতিমতো পুকুরচুরি করেছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গ্লাভস থেকে শুরু করে থারমোমিটার, জীবাণুনাশক টানেল, সাবান, মাস্কসহ বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী কেনা হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকায়। প্রতিটি পণ্য কেনা হয়েছে গায়ের মূল্যের কয়েক গুণ বেশি দামে। অনিয়মের এমন তথ্য উঠে এসেছে রেল মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে দুর্নীতির জন্য রেলওয়ের ২৯ কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের যেন কোনো কেনাকাটায় সম্পৃক্ত করা না হয় এমন পরামর্শও দিয়েছেন তারা। করোনাকালে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সুরক্ষাসামগ্রী কেনার সময় কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। কেনাকাটায় জড়িতরা পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে স্বল্প মূল্যের পণ্য বেশি মূল্যে কিনেছেন। করিৎকর্মা ওই কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের যোগসাজশে অর্থ ভাগবাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময় বাজারে যে গ্লাভস বিক্রি হতো ৮ টাকায় তা কেনা হয়েছে ৩২ টাকায়। ২৫০ মিলি জীবাণুনাশকের মোড়কে ১৩০ টাকা লেখা থাকলেও কেনা হয়েছে ৩৮৪ টাকায়। কর্তাব্যক্তিরা যেসব পণ্য কিনেছেন তার কতভাগ কেনা হয়েছে আর কত ভাগ কেনার নামে অর্থ পকেটে ভরা হয়েছে তাও একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। অনুমিত হিসাবে ৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকার কেনাকাটায় ২ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে; যা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আদায় করাই হবে

যৌক্তিক। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ নজর দেবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

সর্বশেষ খবর