শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

মিয়ানমারের সুমতি হোক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে যেভাবে কানামাছি খেলছে তা দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশে আশ্রিত সে দেশের নাগরিকদের ফেরত নেওয়ার জন্য প্রায় তিন বছর আগে তারা চুক্তি করলেও এযাবৎ একজনকেও ফেরত নেয়নি। বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের কানামাছি খেলার পেছনে তাদের প্রতি চীনের প্রচ্ছন্ন পক্ষপাতিত্ব কাজ করছে কি না তা প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আগ্রহী। চীনের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্কে আমাদের আপত্তির কিছু নেই। মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো সমস্যাও নেই। মুক্তিযুদ্ধের তিক্ত অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ট্রাম্প প্রশাসনসহ পশ্চিমা কোনো কোনো দেশ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সামরিক সহায়তার প্রস্তাব দিলেও বাংলাদেশ তাতে সায় দেয়নি এশিয়ার এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি নিজেদের অঙ্গীকারবদ্ধ অবস্থানের কারণে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মিয়ানমার বাংলাদেশের সদাচরণের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা একান্তভাবেই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং বাংলাদেশ তাদের সমস্যার ব্যাপারে কোনোভাবেই মাথা ঘামাতে চায় না। বাংলাদেশ শুধু চায় আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ পাক। কিন্তু মিয়ানমার যেভাবে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখছে তা সুপ্রতিবেশীসুলভ আচরণের পরিপন্থী। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ বহুপক্ষীয় উদ্যোগের বদলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ওপর এযাবৎ গুরুত্ব দিয়েছে। এ অঞ্চলে যাতে বাইরের দেশগুলো নাক গলাতে না পারে তেমনটিই চেয়েছে। এদিক থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অভিন্ন বন্ধু ভারত, চীন ও জাপানের দায়দায়িত্ব অনেক। এশিয়ার এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঝুলিয়ে রাখা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশা করব, মিয়ানমারের পুনর্নির্বাচিত সু চি সরকার এ বিষয়ে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার পথ বেছে নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর