রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অ্যান্টিবায়োটিক অপব্যবহার

বিপর্যয় রোধে সতর্ক হতে হবে

অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কার মানুষের রোগ চিকিৎসার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। কোটি কোটি অসুস্থ মানুষের রোগ নিরাময়ে তা যে ধন্বন্তরি অবদান রেখেছে এ একটি ধ্রুব সত্য। পাশাপাশি আরেকটি সত্য হলো, অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার মানব জাতির জন্য ইতিমধ্যে হুমকি হয়ে উঠেছে। যেসব দেশ এ হুমকির সামনের কাতারে বাংলাদেশ তার একটি। কারণ উন্নত দেশে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ বিক্রির সুযোগ না থাকলেও বাংলাদেশে এটি অবারিত। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার চেয়ে নিজেই দোকান থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা চালান এমন লোকের সংখ্যা এ দেশে অসংখ্য। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠেছে। স্বল্পোন্নত অনেক দেশেই রয়েছে অভিন্ন সমস্যা। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার কী ধরনের বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি করছে তা ফুটে উঠেছে বৈশ্বিক প্ল্যাটফরম ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স’-এর যাত্রার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কো-চেয়ারের ভাষণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ ও প্রাণীর জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স একটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরিণামদর্শী খাদ্য উৎপাদন আমাদের বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে; যা বিদ্যমান কভিড-১৯ মহামারীর চেয়েও ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দিতে পারে। যুগের পর যুগ বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অর্জিত সাফল্য ম্লান করে দিতে পারে অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, ভুল ডোজ এবং সার্বিকভাবে দুর্বল সংক্রমণ প্রতিরোধব্যবস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর অ্যানিমল হেলথের উদ্যোগে গঠিত বৈশ্বিক প্ল্যাটফরমে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের প্রত্যাশা- বাংলাদেশে যথেচ্ছভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের যে প্রবণতা রয়েছে তার রাশ টেনে ধরতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে দিকনির্দেশনা হিসেবে অনুসরণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর