শিরোনাম
সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বিচিত্রতা

পোড়ামাটির ভাস্কর্য

পোড়ামাটির ভাস্কর্য

কোটবাড়ী ঢিবির কেন্দ্রে ক্রুশাকৃতির উপাসনালয়সহ শালবন বিহারের মতো একটি মঠের সুস্পষ্ট চিহ্ন দেখা যায়। একটি বৃহৎ মসজিদ ও তৎসংলগ্ন কবরস্থান উক্ত ঢিবিতে লক্ষ্য করা যায়। কোটবাড়ী ধ্বংসাবশেষের প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, শৈলরাজির পশ্চিম সীমান্তে অখননকৃত পাক্কা মুড়া (২৭৪ মি. লম্বা, ৯১ মি. চওড়া ও ১৫ মিটার উঁচু) একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এ প্রত্নস্থলটির গুরুত্ব নিহিত। এর ভিত্তির পশ্চিম অংশের প্রসারের মাঝে। সম্ভবত নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বা গতি পরিবর্তনের ফলে এটি সম্ভব হয়েছিল। পলিজনিত কারণে নদীগর্ভ ওপরে উঠে যাওয়ায় এর একাংশ বিরাট এক জলাশয়ে রূপান্তরিত হয়েছে, যা ‘তারা’ দিঘি নামে পরিচিত। এর গভীরতম মধ্যাংশ বর্তমানে দুটি পুকুরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। পুকুরদ্বয়ের মধ্যে বৃহত্তরটি প্রায় দুই একর আয়তন বিশিষ্ট। এটি খননের সময় বিষ্ণুর দুটি আকর্ষণীয় কালো প্রস্তর মূর্তি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি প্রমাণ সাইজের এবং অপরটি সামান্য ছোট। মূর্তি দুটিতে সেন ও দেব রীতির পরিণত বৈশিষ্ট্য প্রতীয়মান। প্রাপ্ত অন্যান্য আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদির মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হলো পরবর্তী দেব বংশের দামোদরদেবের পুত্র ও উত্তরাধিকারী দশরথ দেবের (তেরো শতক) একটি তাম্রশাসন।

সর্বদক্ষিণের চন্ডী মুড়া (স্থানীয়ভাবে রূপবান মুড়া নামে পরিচিত) প্রত্নস্থল থেকে প্রায় ২.৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে শৈলরাজির পশ্চিম প্রান্তের বিস্তৃত উঁচু ঢিবিতে গোলাকার গম্বুজের ন্যায় একটি বিধ্বস্ত কাঠামোর অস্তিত্ব ছিল। স্থানীয় অধিবাসীদের দ্বারা ইট সংগ্রহের ফলে ইতিমধ্যেই উম্মুক্ত স্থাপনাটির কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ স্থাপনাটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন বেরিয়ে আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। লালমাই রেলস্টেশনের প্রায় ১.৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে শৈলরাজির দক্ষিণ প্রান্তে দৃষ্টিগোচর হওয়ার মতো একটি ঢিবি (দৈর্ঘ্যে ৪৫৭ মি. প্রস্থে ১৮৩ মি. এবং উচ্চতায় ১৮ মিটার) বিদ্যমান যা স্থানীয়ভাবে চন্ডী মুড়া নামে পরিচিত। প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে ত্রিপুরার মহারাজা এ ঢিবির চূড়ায় চন্ডীর জোড়া মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। এ থেকেই স্থানটির নাম হয় চন্ডীমুড়া। এ স্থানের প্রতœতাত্ত্বিক চিহ্ন অক্ষত রয়েছে; ঢিবিটিতে সম্ভবত একটি বৃহৎ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বিদ্যমান। প্রথমে মন্দির যুগল নির্মাণের কারণে এবং পরে মন্দিরের সঙ্গে জড়িত লোকজনের বাড়িঘর নির্মাণের জন্য ঢিবির চূড়াটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ স্তরে প্রতœতাত্ত্বিক অবশিষ্টাংশ এখনো অক্ষত রয়েছে বলে ধারণা করা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর